বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমার কোনো অনুশোচনা নেই: নিশো

  •    
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:৩৪

ওটিটি, নাটকে কাজ করছেন কিন্তু ভক্তদের আকাঙ্ক্ষা প্রিয় নায়ককে তারা দেখতে চান বড় পর্দায়। নিশোও চান, তবে তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যেটি চান সেটি হলো ভালো গল্প, ভালো টিম। তাহলে হয়তো সিনেমায় দেখা যাবে নিশোকে।

‘আমি খুবই খারাপ ড্যান্সার’- বলছিলেন আফরান নিশো কিন্তু ভক্তরা তো নাছোড়বান্দা। নিশোকে নাচিয়েই ছাড়বেন। তারা বলছিলেন, ‘বুক চিন চিন করছে হায়, মন তোমায় কাছে চায়’ গানে নিশোকে নাচতে দেখেছেন।

নিশো বললেন, ওটা তো পোংটামি।

অনেক নাটকে, চরিত্রের প্রয়োজনে পোংটামি করতে হয়েছে নিশোকে।

এর উল্টো ঘটনাও আছে। ‘যে গল্পটা বলা হয়নি’ নাটকে নিশোর আবৃত্তিটুকু মনে থাকবে হয়তো ভক্ত-দর্শকদের।

‘আজ মাঘ মাসের ২১ তারিখ, ৩রা ফেব্রুয়ারি। শীত যাই যাই করছে। তবু যেন কিসের মায়ায় কয়েক ফোঁটা শিশির হয়ে রয়ে গেছে ঘাসে ঘাসে পাতায় পাতায়। সূর্য এসে শুষে নেয়ার আগ পর্যন্ত মুক্তোর মতো জ্বলজ্বল করে।…’

সংলাপটি অন্য কেউ রচনা করলেও নিশোর কণ্ঠে তা অন্য রকম আবেদন হয়ে ধরা দিয়েছে দর্শকদের কাছে।

এমন অনেক উল্টো ঘটনা আছে আফরান নিশোর ক্যারিয়ারে। আর সেই ঘটনাগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে আজ নিশো শীর্ষে। তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেতা।

ওটিটি, নাটকে কাজ করছেন কিন্তু ভক্তদের আকাঙ্ক্ষা প্রিয় নায়ককে তারা দেখতে চান বড় পর্দায়। নিশোও চান, তবে তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যেটি চান সেটি হলো ভালো গল্প, ভালো টিম। তাহলে হয়তো সিনেমায় দেখা যাবে নিশোকে।

সিনেমা প্রসঙ্গে এসব কথা যখন নিশো বলছিলেন, তখন পাশেই ছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। তিনি একটু উচ্চ স্বরেই বলে উঠলেন, ‘হবে হবে।’ শুনে হাসলেন নিশো।

নিশো-ফারিয়া দুজনেই শুক্রবার গিয়েছিলেন নুসরাত ফারিয়ার বড় বোন মারিয়া মৃত্তিকের জেকে ব্রাইডাল লাউঞ্জের নতুন আউটলেট উদ্বোধন করতে। সেখানেই সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আফরান নিশো।

মরিচিকা ওয়েব ফিল্মে সালাম শরিফ বাবু চরিত্রে আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

‘দানবের বিনাশ নাই’- এ সংলাপটির মধ্যে দানবের ফিরে আসার ইঙ্গিত আছে। সালাম শরিফ বাবু চরিত্রটি কি ফিরে আসবে?

আপনি যেটা বলছেন যে সিক্যুয়ালের কথা; এমন হতে পারে যে এটার প্রিক্যুয়াল হবে। সালাম শরিফ বাবু কীভাবে বাবু হলো, সেটা সেখানে দেখা যেতে পারে।

দানবের বিনাশ নাই, এটা সালাম শরিফ বাবুর ফিলসফির কথা। এ সমাজে আরও অনেক দানব লুক্কায়িত আছে।

মরীচিকার ক্ষেত্রে এমন হতে পারে যে সিক্যুয়াল না পরিচালক হয়তো প্রিক্যুয়াল নিয়ে ভাবছেন।

প্রিক্যুয়ালে আরও অনেক চরিত্র আসতে পারে। সেখানে সালাম শরিফ বাবু চরিত্রটি বা আপনার কাজ করার সুযোগটা আছে কি না?

প্রিক্যুয়ালে তো এই গল্পটা ঘটে যাওয়ার আগের গল্প। তো সাধারণভাবে ধারণা করা যায় যে সেখানে সালাম শরিফ বাবু চরিত্রটি থাকবে। চরিত্রটি কীভাবে এমন দানব হয়ে উঠল, সে গল্পটা থাকতে পারে। আর সিক্যুয়াল হলে আদৌ এ ধরনের দনবের বিনাশ হয় বা আছে কি না, তা নিয়ে পরিচালক ভাবতে পারেন।

ওটিটিতে কাজ করছেন, নাটক তো করছেনই। দেয়াল টপকানোর ইচ্ছা আপনার বরাবরই থাকে। এর চেয়ে বড় কিছু করার পরিকল্পনা বা ভাবনা আছে কি না?

আমরা এখানে একটা স্বপ্ন নিয়ে আসি। অনেকে ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখে যে, একটা ইন্ডাস্ট্রিতে সে অভিনেতা হিসেবে কাজ করবে। আমি কিন্তু ছোটবেলায় এ ধরনের স্বপ্ন দেখতাম না। আমি একটা বয়সের পর হঠাৎ করেই মডেল হিসেবে কাজ শুরু করি।

আমার অভিনয়জীবনটা শুরু একটা বাক্য থেকে; সেই বাক্যটা হলো- মডেল দিয়ে অভিনয় হয় না। কথাটা শুনে আমি অভিনয়টা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিই এবং সেই দায়িত্বটাই পালন করছি এখনও।

আমার সব সময় চেষ্টা থাকে যে, হিরোইজম বা হিরো হওয়ার চেয়ে কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছাটা বেশি। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, যে প্ল্যাটফর্মগুলো হচ্ছে, সেখানে নানা রকম কাজ হচ্ছে। এসব কাজের মধ্যে কোনোটাকে সহজেই বড় বা ছোট বলার সুযোগ নেই।

সিগনেফিকেন্টলি কোনো একটি মাধ্যমকে বড় বলে দেয়া যাচ্ছে না। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখাকেই বড় বলে ফেলব তাও না।

কিন্তু এটাকে ইগনোরও করা যাচ্ছে না।

সেটাই বলছি, এখন মাধ্যমগুলো অনেক। ওয়েব ফিল্মের যুগ, ওটিটির যুগ। আর আমি সব সময়ই চিন্তা করি যে চরিত্র নির্ভর কাজ করব, গল্পনির্ভর কাজ করব।

এর মধ্যে আমি নিজেকে তৈরি করছি। আমারও বড় পর্দায় কাজ করা ইচ্ছা আছে।

শুক্রবার জেকে ব্রাইডাল লাউঞ্জ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিশো। ছবি: নিউজবাংলা

আপনার একটা বড় ভক্তকুল যদি দাবি করে যে, আমরা কোনো যুক্তি শুনতে চাই না। আমরা নিশোকে বড় পর্দায় দেখতে চাই। কি বলবেন?

সহজ হিসাব হচ্ছে…

(এতটুকু বলতেই পাশ থেকে নুসরাত ফারিয়া বলে উঠলেন, হবে হবে। নিশোর হাসি।)

খুব সহজ হিসাব হচ্ছে, একটা সুন্দর গল্প, একটা সুন্দর টিম, সুন্দর কাজ। আমি সেটাই করতে চাই, যেখানে পারফরম্যান্সের ব্যাপার থাকবে, যেখানে গল্পই মেইন হিরো থাকবে।

অভিষেকে আপনার সহশিল্পী হিসেবে নুসরাত ফারিয়াকে দেখার সুযোগ আছে কি?

ফারিয়াকে পাওয়া যাবে কি না জানি না। তবে ফারিয়া যদি হয় ক্ষতি কী? কোনো সমস্যা নাই তো। চরিত্র অনুযায়ী যাকে বেছে নেয়া হবে, আমি সেখানেই কাজ করব। কারণ আমি একজন শিল্পী, আমি সবার সঙ্গে অভিনয় করতে চাই।

শুক্রবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে নিশো-ফারিয়া। ছবি: সংগৃহীত

আপনি অনেক রকমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনার চেহারার সঙ্গে এত এত চরিত্রের ইমেজ লেগে আছে। এটা তো অভিনয়শিল্পীর জন্য সংকটও।

এটা আমি ধরতে পারি। অনেক চরিত্র যখন করা হয়ে যায়, তখন আর বাকি রইল কী? আবার নতুন কোনো চরিত্র, নতুন কোনো গিমিক, নতুনভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারব কি না, এ রকম একটা আশঙ্কা বা আতঙ্ক থাকে।

আমার জায়গা থেকে অভিনয়ে যতটা এফোর্ট দেয়া যায়, আমি দিই। নাটকে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। গেটআপ, মেকআপের ক্ষেত্রে অনেক কিছু করা যায় না। বাজেটের লিমিটেশন থাকে, যেটা ফিল্মে থাকবে না।

নাটকে যেটা পাওয়া যায়, সিনেমায় তার চেয়ে অনেক বেশি পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস। তাই এটি নিয়ে আমি বেশি আতঙ্কিত না বা আমি এটাকে সুযোগ বলেই মনে করি।

কী কী কাজে আপনাকে দেখা যেতে পারে।

বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কথা হচ্ছে। চরকির সঙ্গে হচ্ছে, জিফাইভের সঙ্গে হচ্ছে, হইচইয়ের সঙ্গে হচ্ছে। শিহাব (নির্মাতা শিহাব শাহীন) ভাইয়ের সঙ্গে একটা কাজ করছি চরকির জন্য।

আমার কাছে বড়-ছোট কোনো কাজ নেই, সব কাজই আমার জন্য বড়। আমি সব দর্শকের জন্যই কাজ করতে চাই। সঙ্গে গুড পারফরম্যান্সটা প্রয়োজন।

নাটকের ভিউ নিয়ে একটা বিতর্ক থাকে। বিয়টি নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?

ভিউ একটা কমার্শিয়াল এলিমেন্ট। নাটকের ভিউ কখনোই মান নির্ধারক না, এটা একটা ডাটা। এটা একটা বিজনেস পলিসি।

অভিনেতা আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

তরুণ, নবীন নির্মাতারা বা প্রযোজকরাও আপনাকে নিয়ে বাজি ধরতে চান। আপনাকে তারা নাটকে রাখতে চান। আপনার মতো অভিজ্ঞ শিল্পীর জন্য এটা কি আর এখন চাপের পর্যায়ে রয়েছে?

আমার কাছে মনে হয়, যে গল্পে যাকে দরকার তাকে নিয়ে কাজ করতে চান পরিচালকরা। মাঝে মাঝে প্রযোজকরাও ব্যবসার জন্য অনেক কিছু বলে দেন।

ছোটবেলায় যখন পড়ালেখা করতাম, মা বলত ক্লাসের ফার্স্টবয় হও। শুধু পাস করলে কেন হয় না, কেন প্রথম হতে হয়। এটা একটা প্রতিযোগিতা এবং ইতিবাচক প্রতিযোগিতা। তাই এটা একটা চাপ হয়তো আবার একই সঙ্গে বিষয়টা আমার কাছে সুখেরও।

এই প্রতিযোগিতা থাকলে, কে কত ভালো করবে তার একটা প্রতিযোগিতা থাকে এবং আমি এটা উপভোগ করি।

তবে একটা বিষয় খারাপ লাগে যে, পার্সোনাল লাইফ থাকে না। একটা জায়গায় বসে কফি খাব, তার উপায় থাকে না। এগুলো আমি মিস করি। সে কারণে আমি আমার ফ্যামিলি মেম্বারদের বেশি সামনে আনি না। তারা যেন তাদের মতো করে চলতে পারে।

অভিনেতা আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত

প্রাপ্তির গল্পটা শুনতে চাই।

জীবনে কষ্ট করেছি, করছি। সেই সুবাদে প্রাপ্তিটাও আসছে। আমার কোনো রিগ্রেড নাই। আমার টার্গেট আমি একজন অভিনেতা হব। তাই বয়স, সময় কোনো কিছুতেই ইনসিকিউরড ফিল করি না।

আমি যেহেতু অভিনেতা, আমার চুলের ডেফথ কমে গেলেও আমি ইনসিকিউরড ফিল করি না। আমি মুচির চরিত্র, ফকিরের চরিত্র করতে চাই আবার ধনীর দুলালের চরিত্রও করতে চাই।

আমার চিন্তাভাবনা পজিটিভ এবং সবার ক্ষেত্রে আমি পজিটিভ, দ্যাটস ইট।

এ বিভাগের আরো খবর