রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা নিয়ে নির্মিত হতে যাওয়া চলচ্চিত্র ফারাজ এর পরিচালক ও প্রযোজককে তলব করেছে দিল্লি হাইকোর্ট।
২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ের ওই জঙ্গি হামলায় আরও অনেকের সঙ্গে নিহত হন ফারাজ আইয়াজ হোসেন। ঘটনাটি নিয়ে সম্প্রতি বলিউডে ফারাজ নামে একটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজ।
এ ঘটনা নিয়ে সিনেমা না বানাতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, পরিচালক ও দুই প্রযোজককে আইনি নোটিস পাঠায় বাংলাদেশের অবিন্তা কবীর ফাউন্ডেশন। ১৩ আগস্ট বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশিত হয় দেশের গণমাধ্যমে।
হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন অবিন্তা কবীরও।
আইনি নোটিশ পাঠানোর পর অবিন্তা কবীর ফাউন্ডেশনের পক্ষে অবিন্তার মা দিল্লি হাইকোর্টে মামলাও করেছেন বলে শনিবার নিউজবাংলাকে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিতি সানজানা।
মিতি অবিন্তা কবীর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও এর সাধারণ সম্পাদক রুবা আহমেদের পক্ষে ‘ল ফার্ম লিগ্যাল কাউন্সিল’ এর ব্যানারে আইনি পারামর্শ দিচ্ছেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র নির্মাতা হংসল মেহতা ও প্রযোজক ভূষণ কুমারকে তলব করেছে দিল্লি হাইকোর্ট।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, হংসল ও ভূষণকে ২৮ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, ‘হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত তারিশি জৈন ও অবিন্তা কবীরের পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, ফারাজ ছিল নিহত দুই মেয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড (সেরা বন্ধু) এবং তার নামেই সিনেমার নামকরণ করা হয়েছে।’
প্রতিবেদনে একজন আইনজীবীর উদ্ধৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, সিনেমায় ফারাজকে উপস্থাপন করতে চাওয়ায় পরিচালকসহ অন্যান্যদের আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সিনেমাটি নির্মাণে পরিচালক-প্রযোজকরা তারিশি ও অবিন্তার পরিবারের কাছ থেকে অনুমতি না নেয়াকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, সিনেমাটির নাম ফারাজ রাখা যাবে না। কারণ, সন্ত্রাসী হামলায় যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের পরিবারের সঙ্গে এই ঘটনা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেয়া হলি আর্টিজান ক্যাফে হামলার কাহিনি বর্ণনা করবে ফারাজ। সিনেমাটি নিয়ে বলতে গিয়ে জানিয়েছিলেন হংসল মেহতা।
তিনি আরও জানান, ফারাজ হবে গভীর মানবতার গল্প এবং সহিংস প্রতিকূলতার মধ্যেও হবে চূড়ান্ত বিজয়। যেহেতু সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তাই গভীরভাবে এটি একটি ব্যক্তিগত গল্পও বলবে যা হংসল প্রায় তিন বছর ধরে তার হৃদয়ের কাছাকাছি রেখেছেন।
উত্তরে ফারাজের নির্মাতারা তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিশে উল্লেখ করা কারণকে ‘খুব অস্পষ্ট’ বলেছেন এবং চলচ্চিত্রটির বিশেষ প্রদর্শনীর দাবি করেছেন।