ভুবন মাঝি ও গণ্ডির পরিচালক ফাখরুল আরেফীন খানের নতুন সিনেমা জে কে ১৯৭১। এর শুটিং শুরু হয়েছে কলকাতায়। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে চলছে সিনেমার শুটিং, চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
সেপ্টেম্বরে শেষ হবে সিনেমার প্রথম লটের দৃশ্যধারণ। দ্বিতীয় লটের শুটিং কবে শুরু হবে তা এখনও চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন সিনেমাসংশ্লিষ্ট একজন।
মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিদেশে ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে। সিনেমাটির চিত্রনাট্য করেছেন দেশের খ্যাতিমান নাট্যকার মাসুম রেজা। সম্প্রতি ফেসবুকে ছবি প্রকাশ পেয়েছে শুটিংয়ের।
জে কে মূলত ফরাসি শব্দ। এটি ফ্রান্সের একজনের নাম। তার ভূমিকায় অভিনয় করছেন কলকাতার শুভ্র সৌরভ দাস এবং পাইলটের চরিত্রে দেখা যাবে সব্যসাচীকে। এ ছাড়া সিনেমায় আরও অভিনয় করছেন দেশের আমান খান।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর। প্যারিসের কাছে অরলি বিমানবন্দরে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের ৭২০ বি ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করতে যাচ্ছিল। এমন সময় বিমানের ককপিটে এক হাতে পিস্তল অন্য হাতে বোমার মতো দেখতে একটি ব্যাগ নিয়ে ঢুকে পড়েন এক ফরাসি যুবক।
তিনি দাবি করেন, ব্যাগের মধ্যে বোমা রয়েছে। এসব দেখিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলেন পাইলটকে।
খুবই অদ্ভুত তার দাবি। এই ফ্লাইটে করে ২০ টন চিকিৎসাসামগ্রী পাঠাতে হবে যুদ্ধপীড়িত বাংলাদেশে। নয়তো এই বিমান কোথাও যেতে দেবেন না তিনি।
তরুণের নাম জ্যাঁ ইউজিন পল কুয়ে। ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে চিকিৎসা ও ওষুধের অভাবে মারা যাওয়া মানুষের জন্য কিছু একটা করতে হবে- এই ভাবনা থেকেই বিমান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন তিনি।
বোমার মতো দেখতে সেই ব্যাগের মধ্যে ছিল একটা বাইবেল আর দুটি ডিকশনারি। এই দেখিয়ে কুয়ে সাত ঘণ্টা আটকে রাখেন বিমানটিকে।
ফরাসি সরকার তখন রাজি হয় এই জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী বিমানে লোড করার জন্য। কিন্তু একটা সময় ফরাসি পুলিশ ধরে ফেলে কুয়েকে।
পরবর্তী সময়ে ফরাসি সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশকে সাহায্য করার। ভারতের আশ্রয় শিবিরে এসেছিল সেই ২০ টন ওষুধ আর চিকিৎসাসামগ্রী।
এই সত্য ঘটনা নিয়েই নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। এটি প্রযোজনা করছে গড়াই ফিল্মস।
২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখে সিনেমাটি করার ইচ্ছা জাগে আরেফীনের। সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে।
সব ঠিক থাকলে সিনেমাটি মুক্তি দেয়া হবে মার্চ মাসে। সিনেমায় একটি গান থাকবে, যেটি গাইবেন নাসিম আলী খান। এর সংগীত পরিচালনা করবেন পার্থ বড়ুয়া।
পরিচালক মনে করেন, এই সিনেমার মাধ্যমে অন্ধকারে থাকা একটি ইতিহাস দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারবেন। একই সঙ্গে ফ্রান্সের জো কুয়েকে ফ্রেন্ড অব বাংলাদেশ খেতাবের দাবি জানানো হবে।