বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অমিতাভ বলছেন ‘শর্ত’, শাওন বলছেন ‘কপিরাইট ভ্যালু’

  •    
  • ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:১১

শাওন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক জায়গায় দেখছি এটাকে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে বলা হচ্ছে। এটা কিন্তু কোনো শর্ত জুড়ে দেয়া হয়নি, এটা কপিরাইট ভ্যালু চাওয়া হয়েছে।’

চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান পেয়েছিলেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ উপন্যাস থেকে সিনেমা নির্মাণের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে অনুদান পান অমিতাভ।

কিন্তু সিনেমাটি কিছু কারণে নির্মাণ করছেন না পরিচালক। এর কারণ হিসেবে নির্মাতা বলেছিলেন, ‘প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের পরিবার যে শর্ত দিয়েছে সিনেমাটি নির্মাণের জন্য, তা মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা সিনেমাটি আর করছি না।’

অমিতাভের এই ‘শর্ত’ শব্দটিকে পরিবর্তন করে প্রয়াত হুমায়ূনের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ‘কপিরাইট ভ্যালু’ বলেছেন।

শাওন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক জায়গায় দেখছি এটাকে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে বলা হচ্ছে। এটা কিন্তু কোনো শর্ত জুড়ে দেয়া হয়নি, এটা কপিরাইট ভ্যালু চাওয়া হয়েছে। এটা সবার কাছেই চাওয়া হয় এবং হবে। এই ভ্যালুটা তার মনমতো হয়নি।’

সিনেমাটি কেন হচ্ছে না? হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যরা কী এমন বললেন যে সিনেমাটি করতে পারলেন না অমিতাভ রেজা, এমন নানা বিষয় নিয়ে শাওন কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে-

প্রথমেই বলতে চাচ্ছি যে, হুমায়ূন আহমেদের ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নিয়ে সিদ্ধান্ত আমার একার ওপর নির্ভর করে না। কারণ হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের আমি একমাত্র সদস্য না এবং এই সিদ্ধান্তগুলো আমি একা নিই না। হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের যারা সদস্য আছেন, হুমায়ূন আহমেদের যারা উত্তরাধিকারগণ আছেন, তারা সবাই মিলে এ সিদ্ধান্তটা নেন। হুমায়ূন আহমেদের সব ধরনের সৃষ্টির বিষয়েই এমনটাই হয়।

যেহেতু আমার সঙ্গে আপনাদের (সাংবাদিকদের) পরিচয় আছে, কোনো ইস্যুতে আপনারা আমাকেই ফোন করেন। দিন শেষে যখন নিউজটা ছাপা হয়, তখন কমেন্টে যা গালাগালি সব আমি একাই খাই।

আমাকে ফোন করলে পাওয়া যায়, আমি মিডিয়াতে কাজ করি বা করতাম সেই সুবাদে সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে, আমার ফোন নম্বরটা আছে, আমাকে ফোন করলে আমার নামটা ব্যবহার হয় যে, শাওন বলেছেন এবং সেই লিংকটার নিচে যা গালাগালি আমার খেতে হয়।

সবাই মনে করেন যে হুমায়ূন আহমেদের যে ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নিয়ে সব সিদ্ধান্ত আমি নিই এবং এটার যে ভ্যালু ধরা হয় সেটা মনে হয় আমি নিয়ে নিই। বিষয়টা একদমই ভুল।

হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮-এর বেশি, তাদের প্রত্যেকের মতামত মিটিং করে নেয়া হয়। কোনো চিঠি চালাচালি করে নয়, একদম সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেয়।

আমাদের দেশের কপিরাইটের ধারণাটা খুব হালকা, সবার মধ্যে ধারণাটা নাই বা অনেকের মধ্যে নাই। যিনি ক্রিয়েটর, তিনি যদি লেখক হন বা পেইন্টার হন, তিনি মারা যাওয়ার পর তার ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টির কপিরাইট তার উত্তরাধিকারদের হয়।

হুমায়ূন আহমেদের যে ইনটেলেকচুয়াল প্রোপার্টি আছে, তার কপিরাইট হোল্ডার পরিবারের সবাই।

এখন এই কপিরাইট ভ্যালুটা কে নির্ধারণ করবে, নিশ্চয়ই তার পরিবারের সদস্যরা নির্ধারণ করবে, ঠিক? এখন কারও পছন্দ হলে সেটা সে নেবে, না হলে সে নেবে না।

হুমায়ূন আহমেদের যে কপিরাইট ভ্যালুটা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা পরিচালকের পছন্দ হয়নি।

কপিরাইট ভ্যালু কি অনেক বেশি-

এটা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করি এবং এটা আমাদের কাছে উচ্চ মূল্যায়িত মনে হয়নি। আমরা তো সাতজন মিলে কথা বলি, সবাই একমত হয়েছি এবং আমাদের তেমনটা মনে হয়নি। আর এখানে মানবিকতার কোনো বিষয় থাকা উচিত না।

ট্রাস্টি বোর্ড-

আমি জানি না এখানে কে ট্রাস্টি বোর্ডের কথা বলেছে। হুমায়ূন আহমেদের কোনো ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়নি। কোনো অফিশিয়াল ট্রাস্টি বোর্ড নাই। হয়তো হবে, আমি সেই প্রস্তাবটা তুলেছি। এটা খুব সম্ভবত হবে কিংবা হবে না। কিন্তু আমরা হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যরা মিলে সিদ্ধান্ত নিই।

অন্য পরিচালকদের ক্ষেত্রে-

উচ্চ মূল্যায়নের যে কথাটি উঠেছে, সেটি নিয়ে আমি একটু কথা বলতে চাই। হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাস নিয়ে সিনেমা অন্য পরিচালকরাও বানাবেন সামনে এবং কিছু অনুমতি দেয়া হয়েছে। যেহেতু পরিচালক বা প্রযোজকরা ঘোষণা দেননি, তাই আমরাও বলছি না। ঘোষণাটা তাদের মুখ থেকেই আসুক।

যিনি বা যারা অনুমতি নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রেও কিন্তু একই রকম মূল্যই ধরা হয়েছে। কেউ যদি মনে করেন যে এই মূল তার জন্য বেশি মনে হচ্ছে, তিনি চাইলে কথা বলতে পারেন, আবেদন করতে পারেন। আমাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ আছে এবং সেই সুযোগ অমিতাভ রেজা নিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কপিরাইট ভ্যালু তার বেশি মনে হয়েছে।

আমি এটাকে আমাদের দুর্ভাগ্য বলব যে অমিতাভ রেজার মতো গুণী পরিচালক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস থেকে সিনেমা বানাবার সুযোগটা নিতে পারলেন না।

এ বিভাগের আরো খবর