বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ই-অরেঞ্জের মতো প্রতিষ্ঠান ঝুঁকি বাড়াচ্ছে তারকাদের

  •    
  • ২২ আগস্ট, ২০২১ ১৪:২৬

ই-অরেঞ্জের মতো একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাশরাফির নাম জড়িয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, যাচাইবাছাই ছাড়া তারকারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজেদের বিতর্কিত করার ঝুঁকিতে ফেলছেন কি না? তারা ভুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির দায় এড়াতে পারেন কি না?

ই-অরেঞ্জ নামের একটি ই-কমার্স সাইটের বিরুদ্ধে বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর একটি মামলায় প্রতিষ্ঠানের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ মামলার আসামি আরও তিনজন।ই-অরেঞ্জ ইস্যুতে বিপাকে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির একসময়ের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ও জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মাশরাফি মোর্ত্তজা। ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা বুধবার রাতে মাশরাফির পল্লবীর বাসার সামনেও ভিড় করেন।মাশরাফি তাদের জানান, ই-অরেঞ্জের সঙ্গে তার চুক্তি জুলাই মাসেই শেষ হয়েছে। তবে তারপরেও তিনি প্রতারিত গ্রাহকদের পাশে থাকবেন।মাশরাফির আন্তরিকতা প্রশংসিত হলেও ই-অরেঞ্জের মতো একটি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, যাচাইবাছাই ছাড়া তারকারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজেদের বিতর্কিত করার ঝুঁকিতে ফেলছেন কি না? একই সঙ্গে তারা ভুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির দায় এড়াতেও পারেন কি না?বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে মাশরাফি মোর্ত্তজার সঙ্গে। সাবেক এই অধিনায়কের দাবি, কোনো কোম্পানি অনুমোদিত কি না সেটা পরখ করার ক্ষমতা আসলে ক্রিকেটারদের নেই।মাশরাফি বলেন, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়ের দিকে যদি তাকান, প্রত্যেকের ১০টা, ১৫টা, ২০টা করে চুক্তি আছে। এখন দেখার বিষয় হলো, সেগুলো অনুমোদিত কি না সেটা। কোম্পানিগুলো ব্যবসা করার জন্য যদি অনুমোদিত হয় দেশে, সেটার অনুমোদন তো আর খেলোয়াড়রা দেন না। সেই ক্ষমতা তো আমাদের নেই।’তবে মাশরাফি জানান, চুক্তি করার আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তারা পরখ করে নেন।তিনি বলেন, ‘ভ্যালিডিটি তো আমাদের দেখার ভিতর পড়বে না। মালিক তো ভ্যালিড কি না সেই আলোচনা আমাদের সঙ্গে করবে না। প্রথম দেখার বিষয় হচ্ছে সেটা বাংলাদেশে অনুমোদিত কি না। ভুয়া কোম্পানি হলে সে তো অনুমোদন পাবে না। যদি সার্টিফিকেট থাকে, ব্যবসার অনুমোদন থাকে, ট্রেড লাইসেন্স থাকে, তাহলে তো আর কোনো কিছু আমার দেখার বিষয় না।’দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে মাশরাফি বলেন, তিনি কোনো কোম্পানি বা পণ্যের একজন শুভেচ্ছাদূত বা মডেল হিসেবে কাজ করেন, তিনি কোনো ব্যবসায়িক অংশীদার নন।নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হলো ব্যবসায় অংশীদারের বিষয়টা। ব্যবসায় অংশীদার হলে তখন আপনি রেসপনসিবল।‘আমি তার মডেল হিসেবে আছি। ব্যবসা করতে যাচ্ছি না। তাকে কে ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছে, তাকে কে অনুমোদন দিচ্ছে সেটা তো অন্যান্য অফিসের দেখার কাজ।’নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত এই পেইসার যোগ করেন, প্রতিষ্ঠান বা পণ্যে কোনো ঝামেলা হলে খেলোয়াড়ের চুক্তি বাতিল করার সুযোগ থাকে।তিনি বলেন, ‘সব চুক্তিতে একটা টার্ম থাকে যে, দুই পক্ষ চুক্তি বাতিল করতে পারবে। কোম্পানি চাইলে আমাকে নোটিশ দিতে পারে, আমিও চাইলে কোম্পানিকে নোটিশ দিতে পারি। দুই পক্ষ যেকোনো সময় চুক্তি বাতিল করতে পারে।’মাশরাফি, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বা মুশফিকুর রহিমের মতো বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের সুপারস্টাররা অবশ্য এখন আর সরাসরি নিজেরা চুক্তির খুঁটিনাটি বিষয়গুলো যাচাই করেন না। কাজটি করার জন্য তাদের অধিকাংশেরই আছে ব্যক্তিগত এজেন্ট। এরাই আগ্রহী কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের সঙ্গে ক্রিকেটার বা তারকার পক্ষে আলোচনা সেরে নেয়।এমন একটি এজেন্সি ইমাগো স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। ইমাগো বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ইমেজ রাইটসের বিষয়টি দেখভাল করে।কোনো ক্রিকেটার বা তারকার সঙ্গে চুক্তির আগে এজেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইমাগো ওই পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করে বলে জানান ইমাগোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ রাকিব।রাকিব বলেন, ‘আমরা প্রথমে দেখি যে প্রোডাক্টের ইতিবাচক প্রভাব ভোক্তাদের ওপর কতটুকু এবং কোনো নেতিবাচক প্রভাব আছে কি না। এ ছাড়া খেলোয়াড়ের ইমেজের সঙ্গে প্রোডাক্টটি যায় কি না। সাধারণত আমরা যেসব কোম্পানির ট্র্যাক রেকর্ড ভালো তাদের সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা করি।’চুক্তির কোনো বিষয়ই খেলোয়াড় বা তারকাদের কাছে গোপন রাখা হয় না এমনটাই দাবি করেছেন রাকিব। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেন।রাকিব বলেন, ‘আমরা চুক্তি ও কোম্পানির সবকিছু বিস্তারিতভাবে খেলোয়াড়কে জানাই। এখন পর্যন্ত আমরা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ও প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেছি। প্রতিটি এনডোরসমেন্টের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।’খেলোয়াড়দের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত ও মডেল হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। বোর্ডের চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এমন কোনো পণ্য বা ব্র্যান্ডের সঙ্গে ক্রিকেটাররা চুক্তি করতে পারবেন না এমন বিধিনিষেধ আছে।নিউজবাংলাকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি বলেন, ক্ষতিকর পণ্যসহ কয়েকটি পণ্যের মডেল হওয়ার ওপর বিসিবির নিষেধাজ্ঞা আছে। এর বাইরে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ওপর হস্তক্ষেপ করে না বোর্ড।নিজামউদ্দিন বলেন, ‘কিছু বিতর্কিত ব্র্যান্ড রয়েছে যেগুলো আমরা নিরুৎসাহিত করি। বিসিবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে জাতীয় দলের কেউ চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না। টোব্যাকো, অ্যালকোহল এগুলো থেকে বিরত থাকতে বলি। এগুলো আমাদের নিয়মের বহির্ভূত।’তবে কোনো পণ্যের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে বোর্ডের কাছ থেকে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের ক্লিয়ারেন্স নিতে হয় জানান বিসিবির প্রধান নির্বাহী।তিনি বলেন, ‘আইনগত প্রক্রিয়া মেনে, দেশের আইনের ভেতর থেকে যেকোনো খেলোয়াড় চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন। যারা আমাদের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার তাদের ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। যারা চুক্তির বাইরে রয়েছেন তারা ব্যক্তিগতভাবে করেন। ক্লিয়ারেন্স দরকার হয় না।’

এ বিভাগের আরো খবর