টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে বাংলাদেশ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় টাইগাররা কতোটা পিছিয়ে ক্রিকেটের বনেদি ফরম্যাটে। চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে ৪টি সিরিজ খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। চারটি সিরিজ ছিল দেশের বাইরে।
এই চার সিরিজে সর্বমোট ছিল ৭টি ম্যাচ। আর এই ৭ ম্যাচের ভেতর ৬টিতেই লজ্জাজনক হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। একটি ড্রয়ের সুবাদে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে থেকেই চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ করতে হয়েছিল মুমিনুল-রাহীদের।
টেস্ট চ্যম্পিয়নশিপের শুরুটা হয় ভারতের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে। ২ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ হারে ইনিংস ব্যবধানে। পাকিস্তানের বিপক্ষেও একই হাল। প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ৪৪ রানের হারের পর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দ্বিতীয় ম্যাচ না খেলেই দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশ।
এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজে ইনিংসে না হলেও হার ছিল ধারাবাহিক। সব শেষ শ্রীলঙ্কা সফরে কপাল ফেরে বাংলাদেশের। প্রথম টেস্টে পায় ড্র। তারপর ২০৯ রানের বড় হার নিয়ে দেশে ফিরে আসে মুমিনুল হকের দল।
২১ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলার পর এমন দুর্দশার অজুহাত হিসেবে উঠে আসে অপর্যাপ্ত টেস্ট খেলার সুযোগ। আপাতদৃষ্টিতে এটি প্রধান কারণ। কেননা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের গেল আসরে র্যাঙ্কিংয়ের একে থাকা ভারত খেলেছে ১৭টি ম্যাচ, দুইয়ে থাকা নিউজিল্যান্ডের খেলা ম্যাচ সংখ্যা ১১, অস্ট্রেলিয়ার ১৪ এবং ইংল্যান্ডের ২১।
বাংলাদেশ ছাড়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাকি দলগুলোর সবাই খেলেছে দশের বেশি ম্যাচ।
কম ম্যাচ খেলা হারের কারণ হিসেবে দেখা হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি বদলেছে বলে মনে করেন জাতীয় দলের তরুণ ওপেনার শাদমান ইসলাম। নিজেরা ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারলে সামনে বাংলাদেশের বিপক্ষে আরও দল টেস্ট খেলতে আগ্রহী হবে মনে করেন তিনি।
শাদমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে হয়তো আমাদের টেস্ট সেভাবে খেলা হত না। কিন্তু গত কয়েক বছরে আমরা বেশ কয়েকটি টেস্ট খেলেছি। সামনেও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কিছু টেস্ট আছে। নিজেদের ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারলে সামনে আরও টেস্ট আসবে। সেগুলোতে ভালো কিছু হবে।’
চলতি বছর এখনও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২১-২০২৩ আসরের কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ না খেললেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের টেস্ট চ্যম্পিয়নশিপের নতুন আসর।
আগের আসরে ভালো না করলেও চলতি আসরে ভালো করতে মুখিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট স্পেশালিস্টরা। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর দিন থেকে নিয়মিত ভাবে অনুশীলন ইঙ্গিত দেয় ভালো কিছু করতে মুখিয়ে রয়েছেন তাইজুল-মুমিনুলরা।
একই সুরে শাদমানের কণ্ঠেও। সাদা পোশাকে ভালো কিছু করে দেখাতে চান বাঁহাতি এই ওপেনার।
বলেন, ‘শেষ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপটা আমাদের অতোটা ভালো হয়নি। সবাই খুব ভালো পারফরম্যান্স দিচ্ছে, সবাই খুব ভালো প্র্যাকটিস করছে। তাই আশা করি সামনে ভালো হবে।’
আপাতত বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি নিচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। এরপরই ডাক পড়বে মুমিনুল, শাদমান, তাইজুল, রাহিদের। নভেম্বর-ডিসেম্বরে পুরো দমে টেস্ট মৌসুম শুরু হয়ে যাবে টাইগারদের।