বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তালেবানেরও পছন্দ ক্রিকেট

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২১ ১৫:২৯

তালেবান অধিকাংশ সামাজিক কর্মকাণ্ডে বিধিনিষেধ রাখলেও ক্রিকেটে তারা বাধা দেয়নি। এবারও কাবুল দখলের আগে তালেবান হাই কমান্ড থেকে ক্রিকেটকে সুনজরে রাখার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

গত দুই দশকে যুদ্ধবিগ্রহ ও তালেবান আগ্রাসনের বাইরে যে কয়টি বিষয়ে আফগানিস্তান বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে তার একটি হচ্ছে ক্রিকেট। উপমহাদেশের জনপ্রিয় এই খেলাটির অন্যতম উঠতি দল আফগানিস্তান ও তাদের অধিনায়ক রাশিদ খান বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলার।তালেবান কাবুল দখল করে নেয়ার পর আফগানিস্তানে ক্রিকেটকে ঘিরে দেখা দেয় শঙ্কা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বছরে বিশ্ব ক্রিকেটের এই উঠতি শক্তি দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন অনেকে।ভক্ত-সমর্থক ও বিশ্লেষকদের আশ্বস্ত করেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। তারা জানিয়েছে, সূচি অনুযায়ী চলবে রাশিদ খান-মুজিবুরদের প্রস্তুতি ও সফর। তালেবানের ক্রিকেটের প্রতি সুনজর রয়েছে এমনটা জানান এসিবির প্রধান নির্বাহী হামিদ শিনওয়ারি।তালেবানও ক্রিকেট ভালোবাসে। যে কারণে ক্রিকেটের উন্নয়নের গতি থামেনি বলে জানান তিনি।শিনওয়ারি যোগ করেন, ‘ক্রিকেটের সৌন্দর্যটা হচ্ছে যে এটাকে সবাই ভালোবাসে। ২০ বছর ধরে তালেবানসহ সমাজের নানা স্তর থেকে আমরা সমর্থন পেয়েছি। ক্রিকেটারদের কোনো ক্ষতি হওয়ার সমস্যা নেই। ২০ বছরে এমন কোনো ঘটনার কথা শুনিনি। খেলাধুলা বিশেষ করে ক্রিকেট নিয়ে কোনো সমস্যা দেখছি না।’দেশটির ক্রিকেটকে এই পর্যায়ে আসতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ১৯৯৫ সালে আফগান ক্রিকেট বোর্ড গঠনের পর ২০০০ সালে তৎকালীন তালেবান সরকার একমাত্র ক্রিকেট খেলাটিকে বৈধতা দেয়। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র বাহিনীর আক্রমণের পর পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানের শরণার্থী ক্যাম্প ও সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে চলতে থাকে আফগানদের ক্রিকেট অনুশীলন।

আফগানিস্তানের সবচেয়ে বিখ্যাত দুই ক্রিকেটার মোহাম্মদ নাবি ও রাশিদ খান। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নেয় আফগানিস্তান। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহায়তায় তারা অংশ নেয় এসিসি ট্রফিতে।মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও ভারতে বেশ কিছু আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলে আফগানিস্তান। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পেরোতে না পারলেও দুই বছর পর পায় আইসিসির সহযোগী সদস্যের মর্যাদা।২০১৪ সালে এশিয়া কাপ ও ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের কথা জানান দেয় আফগানিস্তান। জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগ আইপিএলে খেলে জনপ্রিয়তা পান মোহাম্মদ নাবি ও রাশিদ খানের মতো ক্রিকেটাররা।নিজের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় রাশিদ খান হয়ে ওঠেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা ও আফগানিস্তান ক্রিকেটের পোস্টার বয়।নাবি-রাশিদের ধারাবাহিকতায় দেশটি থেকে বেরিয়ে এসেছেন মুজিবুর রেহমান, হজরতুল্লাহ জাজাই ও কয়েস আহমেদের মতো ধারাবাহিক পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা।২০১৭ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়ে টেস্ট মর্যাদা লাভ করে আফগানিস্তান। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে খেলে তাদের ঐতিহাসিক অভিষেক টেস্ট।দেশে খেলাটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে হু হু করে। স্থানীয় কিশোর-তরুণদের মধ্যে ফুটবলের পাশাপাশি জনপ্রিয়তায় পাল্লা দিতে থাকে ক্রিকেট।তালেবান অধিকাংশ সামাজিক কর্মকাণ্ডে বিধিনিষেধ রাখলেও ক্রিকেটে তারা বাধা দেয়নি। এবারও কাবুল দখলের আগে তালেবান হাই কমান্ড থেকে ক্রিকেটকে সুনজরে রাখার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

আফগান কিশোরদের অনেকেই ফুটবলের পাশপাশি বেছে নিচ্ছে ক্রিকেট। ছবি: এএফপি

যে কারণে এসিবি আশাবাদী শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। আর জাতীয় দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও একটি সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করছে আফগানিস্তান বোর্ড, এমনটা জানান জাতীয় দলের মিডিয়া ম্যানেজার হিকমত খান।ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে হিকমত আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপে খেলব। সে জন্য খেলোয়াড়রা কাবুলে দু-এক দিনের মধ্যেই অনুশীলনে যোগ দেবেন। অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের জন্য আমরা ভেন্যু খুঁজছি। মালয়েশিয়া বা শ্রীলঙ্কাতেও সেটি হতে পারে। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে।’

এ বিভাগের আরো খবর