টেস্ট ক্রিকেটের আসল রোমাঞ্চ দেখল স্যাবাইনা পার্ক। ক্রিকেটের ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী জ্যামাইকার এই মাঠ দেখেছে বহু রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি, নায়কোচিত ইনিংস ও বোলিং স্পেলের ঝড়। সেই সবের সঙ্গে যুক্ত হলো নতুন এক অধ্যায়।
পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম টেস্টের শেষ দিন রচিত হলো নতুন সেই রোমাঞ্চের। ১ উইকেটের রুদ্বশ্বাস জয়ে ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিক উইন্ডিজ।
১৬৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা উইন্ডিজ যখন নিজেদের নবম উইকেট হারায় তখনও লক্ষ্য থেকে ১৭ রান দূরে তারা। পাকিস্তানি দুই ফাস্ট বোলার শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলি ভয়ংকর মূর্তি ধারণ করেছেন।
স্যাবাইনা পার্কের সবুজ পিচে দুই জনে মিলে শিকার করেছেন ৭ উইকেট। এই দুই জনকে সামলাবেন ক্যারিবিয়ানদের শেষ দুই ব্যাটসম্যান; এমনটা তখন মনে হচ্ছিল প্রায় অসম্ভব।
সেই পরিস্থিতিকে সম্ভব করলেন কিমার রোচ ও জেডেন সিলস। শেষ উইকেটে ২৫ বল টিকলেন শাহিন-হাসানের তোপ সামলে।
যোগ করলেন মহামূল্যবান ১৭ রান। রোচ আগে থেকেই ব্যাট করছিলেন। ৫২ বল খেলে তিনি অপরাজিত থাকলেন ৩০ রানে। আর সিলস ১৩ বল খেলে যোগ করলেন মহামূল্যবান ২ রান।
এমন রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর ম্যাচের আলো কেড়ে নিয়েছেন দুই ক্যারিবিয়ান টেইলএন্ডার রোচ ও সিলস। রোচ সিনিয়র সদস্য হওয়ায় তার ওপরই দায়িত্ব ছিল ১৯ বছরের সিলসকে পথ দেখানোর। সিলস দারুণ ভাবেই সেটা করেছেন ম্যাচ শেষে জানান রোচ। আর স্যাবাইনা পার্কের ইনিংসটিকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলেন এই অভিজ্ঞ ফাস্ট বোলার। তিনি বলেন, ‘আমি একটা করে বল খেলার চেষ্টা করছিলাম। এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। গ্যাপ খুঁজে জোরে দৌড়ানোর চেষ্টা করেছি। জেডেনকে বলেছি স্ট্রেট বলগুলো থেকে স্টাম্প রক্ষা করতে। সেটা সে চমৎকার ভাবে করেছে।’ পঞ্চম দিন পাকিস্তানকে ২০৩ রানে গুটিয়ে ১৬৮ রানের লক্ষ্য পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তানকে গুড়িয়ে দিতে মূল ভূমিকা ছিল সিলসের।ক্যারিয়ারের প্রথমবার পাঁচ উইকেট নেন এই তরুণ ফাস্ট বোলার। ১৯ বছর ৩৩৬ দিন বয়সের সিলসই উইন্ডিজের পক্ষে টেস্টে পাঁচ উইকেট নেয়া সবচেয়ে কম বয়সী বোলার। ৫৫ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি। রোচ ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট। ১৬৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলির তোপের মুখে বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিক দল। ৯২ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে দারুণভাবে প্রাধান্য বিস্তার করে সফরকারীরা। সেখান থেকে জারমেইন ব্ল্যাকউডের হাফ সেঞ্চুরিতে কিছুদূর এগিয়ে যায় উইন্ডিজ ইনিংস। আর শেষ দিকে ছিল রোচ ও সিলসের ওই জুটি। সিলস ম্যাচে ৮ উইকেট ও রোচে সঙ্গে জুটির জন্য ম্যাচ সেরা হন। পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে এর আগে ২০০০ সালে অ্যান্টিগাতেও এমন জমজমাট ম্যাচ হয়েছিল। সেটাও ১ উইকেটে জিতে নেন উইন্ডিজ।