বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তালেবান আগ্রাসনে বিপন্ন আফগানিস্তানের ক্রিকেট

  •    
  • ১৫ আগস্ট, ২০২১ ১৪:০৯

তালেবান আগ্রাসনের ফলে আফগানিস্তান দলের ঘরোয়া ক্রিকেট ও প্রস্তুতি ব্যাহত হবে নিশ্চিতভাবেই। দলটিকে হয়তো ফিরে যেতে হবে দেড় দশক আগের পরিস্থিতিতে।

তালেবান আগ্রাসনের মুখে বিপন্ন অবস্থায় আফগানিস্তান। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা এরই মধ্যে ঢুকে পড়েছে কাবুলে। যেকোনো সময় তালেবানের হাতে পতন হতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির রাজধানীর।

এমন বাস্তবতায় আফগানিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও আইপিএলের বছরে দেশের সেরা তারকাদের প্রস্তুতি পর্ব নিয়েও শঙ্কা থেকে যাচ্ছে।তালেবানের আগ্রাসনে আফগান সরকার দেশের দুই-তৃতীয়াংশের পাশাপাশি অর্ধেক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। ফলে দেশটিতে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আক্ষরিক অর্থেই অনিশ্চয়তায়।১৯৯৫ সালে আফগান ক্রিকেট বোর্ড গঠনের পর ২০০০ সালে তৎকালীন তালেবান সরকার একমাত্র ক্রিকেট খেলাটিকে বৈধতা দেয়। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রবাহিনীর আক্রমণের পর পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানের শরণার্থী ক্যাম্প ও সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে চলতে থাকে আফগানদের ক্রিকেট অনুশীলন।পাকিস্তানের দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নেয় আফগানিস্তান। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহায়তায় তারা অংশ নেয় এসিসি ট্রফিতে।মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও ভারতে বেশ কিছু আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট খেলে আফগানিস্তান। ২০১১ সালের বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পেরোতে না পারলেও দুই বছর পর পায় আইসিসির সহযোগী সদস্যের মর্যাদা।২০১৪ সালে এশিয়া কাপ ও ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের কথা জানান দেয় আফগানিস্তান। জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগ আইপিএলে খেলে জনপ্রিয়তা পান মোহাম্মাদ নাবি ও রাশিদ খানের মতো ক্রিকেটাররা।নিজের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় রাশিদ খান হয়ে ওঠেন বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা ও আফগানিস্তান ক্রিকেটের পোস্টার বয়।নাবি-রাশিদের ধারাবাহিকতায় দেশটি থেকে বেরিয়ে এসেছেন মুজিবুর রেহমান, হজরতুল্লাহ জাজাই ও কয়েস আহমেদের মতো ধারাবাহিক পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা।২০১৭ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়ে টেস্ট মর্যাদা লাভ করে আফগানিস্তান। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে খেলে তাদের ঐতিহাসিক অভিষেক টেস্ট।

দেশে খেলাটির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে হু হু করে। স্থানীয় কিশোর-তরুণদের মধ্যে ফুটবলের পাশাপাশি জনপ্রিয়তায় পাল্লা দিকে থাকে ক্রিকেট।

কাবুলে ক্রিকেট খেলছেন স্থানীয় তরুণরা। ছবি: এএফপি

গত প্রায় দেড় দশকের এই উত্থান এখন হুমকির মুখে। তালেবানের নতুন আগ্রাসন ও জানমালের হুমকির সামনে গৌণ হয়ে পড়েছে ক্রিকেট।তারপরও দেশটির ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুই তারকা রাশিদ ও নাবি বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এই দুঃসময়ে।নাবি তালেবান আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর টুইট করে দুর্দশার কথা জানান। টুইটবার্তায় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক লেখেন, ‘একজন আফগান হিসেবে দেশের অবস্থা দেখে আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আফগানিস্তান চরম বিশৃঙ্খলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং দুর্যোগ ও দুর্দশার সঙ্গে বেড়ে চলছে মানবতার সংকট। ঘরবাড়ি হারিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সামনে রেখে পরিবারকে নিয়ে সবাই কাবুলের দিকে ছুটছেন।‘বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, আফগানিস্তানকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেবেন না। আমরা আপনাদের সহায়তা চাই। আমরা শান্তি চাই।’রাশিদ খানের কণ্ঠেও ছিল একই আকুতি। আফগানিস্তানের চলমান সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ব নেতাদের কাছে আকুতি জানান আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় এই তারকা।এক টুইটবার্তায় তিনি লেখেন, ‘প্রিয় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, আমার দেশে সহিংসতা চলছে, যাতে প্রতিদিন শিশু এবং নারীসহ হাজার হাজার নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি ও সহায় সম্পত্তি। ঘরছাড়া হচ্ছে হাজারো পরিবার।’আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ শান্তি চাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এমন সহিংসতায় আমাদের ছেড়ে যাবেন না। অনুগ্রহ করে আফগানদের হত্যা এবং আফগানিস্তানকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করুন। আমরা শান্তি চাই।’

তালেবান আগ্রাসনের ফলে আফগানিস্তান দলের ঘরোয়া ক্রিকেট ও প্রস্তুতি ব্যাহত হবে নিশ্চিতভাবেই। দলটিকে হয়তো ফিরে যেতে হবে তাদের দেড় দশক আগের পরিস্থিতিতে।সে সময় তাদের ক্রিকেটের মূল শিবির ছিল আরব আমিরাত ও পাকিস্তানে।

এ বিভাগের আরো খবর