করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্য টুর্নামেন্ট। যার ফলে একরকম বেকার সময় কাটাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানিয়েছে, শাটডাউন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় দ্রুত তারা শুরু করতে যাচ্ছে এনসিএল, বিসিএলের মতো ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের টুর্নামেন্টগুলো। তবে ঠিক কবে শুরু হচ্ছে সেই সূচি এখনও ক্রিকেটারদের জানায়নি বিসিবি।গত সপ্তাহে বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই মাসেই স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধিনিষেধ মেনে তারা একটা সূচি দাঁড় করাবে।বিসিবির এমন আয়োজনের কথা জানেন না দাবি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা অনেক ক্রিকেটারের। তারা এখনও ভুগছেন শঙ্কায়।
নিউজবাংলা বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে বিষয়টি। বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী এই মাসে ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করার যে কথা বলেছেন সে সম্বন্ধে তারা অধিকাংশই অবগত নন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনা বিভাগে খেলা এক সিনিয়র ব্যাটসম্যান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো এই বিষয়ে কিছুই জানি না। এমন কিছু কী বলা হয়েছে নাকি? কিছুই জানি না।’আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সিনিয়র ওপেনার ইমরুল কায়েসেরও কাছে সেই বার্তা পৌঁছায়নি। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা এখন পর্যন্ত হয়নি।’ইমরুল এর সঙ্গে যোগ করেন দীর্ঘদিন কোভিডের কারণে খেলা না থাকায় মাঠে ফিরতে অনুশীলন প্রয়োজন হবে। বিসিবির লিগ ও টুর্নামেন্ট কমিটির নিয়ম অনুযায়ী এনসিএল ও বিসিএল শুরুর আগে নির্ধারিত সময় বরাদ্দ থাকে ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য।ইমরুল জানান, ‘কোভিডের কারণে গত তিন-চার মাস ধরে অনুশীলন করছি না। হুট করে তো আর টুর্নামেন্ট শুরু হবে না। আগে অবশ্যই এক সপ্তাহ দশ দিন সময় দেয়া হবে অনুশীলনের জন্য। তখন সেটা কাজে লাগানো যাবে।’
ঘরোয়া ক্রিকেটারদের অধিকাংশেরই জীবিকা আসে এনসিএল, বিসিএল ও ডিভিশন ক্রিকেট খেলে। তাই নিশ্চিত সূচি না হওয়ায় তাদের শঙ্কা একেবারে অমূলক নয়।
তবে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব) অনুশীলনের দায়ভার ও শঙ্কায় থাকার বিষয়টিকে দেখছে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত সমস্যা হিসেবে। তাদের মতে চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা নিয়মিত পারিশ্রমিক পাচ্ছেন, তাই জীবিকা নিয়ে আপাতত সমস্যা থাকার কথা না তাদের।
কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনুশীলন বলেন, আর ফিটনেস বলেন এগুলো ধরে রাখা কিন্তু ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত বিষয়। তার ফিটনেস তাকেই ধরে রাখতে হবে। আমাদের চুক্তিতে রয়েছেন ৯০ জন ক্রিকেটার। প্রতি মাসে তারা বেতন নিচ্ছেন। তাই তাদের ফিটনেস ধরে রাখাটা তাদেরই ব্যপার।’
‘তবে হ্যাঁ, আমাদের হাতে যেটা রয়েছে যে আমরা তাদের অনুশীলনের একটা পরিবেশ গড়ে দিতে পারি। আসন্ন লিগ শুরুর আগে সেটি দেখতে পারবেন।’
করোনা বিরতির পর জাতীয় ক্রিকেট দলকে ব্যস্ত রেখেছে বিসিবি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর আয়োজন করা হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। দল গেছে নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে সফরে। সামনেই আসছে নিউজিল্যান্ড।
সেই ধারাবাহিকতায় বিসিবি শুরু করতে যাচ্ছে এনসিএল। ক্রিকেটারদের আশা দ্রুত কাটবে করোনাকালীন ক্রিকেট মাঠে না থাকার দুরাবস্থা।