বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফিফ, নাঈমদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময়

  • ইশতিয়াক আহমেদ, ক্রিকেট বিশ্লেষক ও সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার   
  • ৮ আগস্ট, ২০২১ ১৮:১০

অনেক দিন ধরে বাংলাদেশ তরুণ ও এক্সাইটিং প্রতিভার সন্ধানে ছিল। সাকিব-তামিম-মুশফিকদের কাঁধে ভর করে ১৫ বছর চলা বাংলাদেশ আমার মনে হয় এখন আফিফ হোসেন, শামীম পাটোয়ারি, নাঈম শেখ ও শরীফুল ইসলামদের মতো তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি সিরিজে চোখে পড়ার মতো দিক ছিল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা। প্রতিটি বিভাগেই ধারাবাহিক ছিল টাইগাররা। এই ধারাটা ধরে রাখা খুবই দরকার। কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য এর চেয়ে ভালো প্রস্তুতি আর হতে পারে না।অস্ট্রেলিয়ার মতো একটা প্রফেশনাল দলকে সিরিজে হারানো নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের ব্যাপার। এবারের সিরিজে দলের ধারাবাহিকতার পাশাপাশি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অধিনায়কত্ব বাড়তি নম্বর পাওয়ার দাবি রাখে। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে একেবারে একপেশেভাবে জেতা বাংলাদেশকে র‍্যাঙ্কিংকে তো সাহায্য করবেই, একই সঙ্গে দলের আত্মবিশ্বাসকেও সামনের দিনগুলোতে দারুণ এক অবস্থানে নিয়ে যাবে।

মজার ব্যাপার হলো, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেটভক্তরা নিজের দলের এই করুণ অবস্থা দেখতে পাচ্ছেন না। সে দেশে টিভিতে সম্প্রচার না হওয়ায় তাদের নতুন অধিনায়ক ম্যাথিউ ওয়েড কেমন করছেন বা তাদের দল মুস্তাফিজের ভ্যারিয়েশন সামলাতে কতটা খাবি খাচ্ছেন, সেটা তারা টিভিতে দেখতে পারছেন না। মোট কথা দলের করুণ এই অবস্থা সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল নন।

তবে চতুর্থ ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা হলেও নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে পেরেছে। সাকিব আল হাসানের এক ওভারে ড্যান ক্রিস্টিয়ানের পাঁচ ছক্কা আসলে জয়-পরাজয়ের ব্যবধানটা করে দেয়।

সিরিজের খেলাগুলো লো স্কোরিং আর ঠিক আদর্শ টি-টোয়েন্টি মেজাজে না হলেও দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ হয়েছে সবগুলোই। দুই দলই নিজেদের লড়াকু চেহারা দেখাতে পেরেছে।

বাংলাদেশ দলের এই লড়াকু মনোভাব একটি নতুন অধ্যায়ের শুরু করবে বলে আশা করা যায়। নতুন ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের মিশেলে বাংলাদেশের এই জয়ের ধারাবাহিকতা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার মতো।

অনেক দিন ধরে বাংলাদেশ তরুণ ও এক্সাইটিং প্রতিভার সন্ধানে ছিল। সাকিব-তামিম-মুশফিকদের কাঁধে ভর করে ১৫ বছর চলা বাংলাদেশ আমার মনে হয় এখন আফিফ হোসেন, শামীম পাটোয়ারি, নাঈম শেখ ও শরীফুল ইসলামদের মতো তরুণদের নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারে।

গত কয়েকটি সিরিজে বাংলাদেশ দলের তরুণরা সব ফরম্যাট অর্থাৎ টেস্ট, টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্সের স্বাক্ষর রাখতে পেরেছে।

এসব তরুণ ক্রিকেটারের বেড়ে ওঠা, পরিচর্যা ও স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) কৃতিত্ব দিতেই হচ্ছে।তবে শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আর ঘরোয়া লিগে খেলিয়ে এদের বিশ্বমানের খেলোয়াড় হিসেবে তৈরি করা সম্ভব নয়। বয়সভিত্তিক দল ও বাংলাদেশ এ-দলকে বিদেশের মাটিতে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে না খেলানো পর্যন্ত এদের খেলায় প্রয়োজনীয় উন্নতি আনা যাবে না।

বাংলাদেশে যে প্রতিভার অভাব নেই তার প্রমাণ যুব বিশ্বকাপ জয়। সেটার পর সাম্প্রতিক আফিফ-সোহানদের মতো ক্রিকেটারের ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। তাদের মধ্যে ধারাবাহিকতা তৈরি ও জয়ের মানসিকতা ধরে রাখার উপায় হচ্ছে বিদেশের মাটিতে কঠিন কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড একটি আর্থিকভাবে সচ্ছল ও সমৃদ্ধ বোর্ড। তবে ক্রিকেটে উন্নয়ন করার মানসিকতার লোকের বড্ড অভাব।

দুঃখজনকভাবে ক্রিকেট বোর্ডের বিভিন্ন দায়িত্বে সাবেক অধিনায়ক যারা আছেন, তারা তাদের যোগ্যতা ও মেধা অনুযায়ী বাংলাদেশ দলে উল্লেখযোগ্য ও দৃষ্টি কাড়ার মতো কোনো অবদান এখন পর্যন্ত রাখতে পারেননি।যুব বিশ্বকাপ ছাড়া আর কোনো উল্লেখযোগ্য অর্জন তাদের আছে বলে আমি মনে করতে পারি না। অথচ অর্থ ও বিত্তের কোনো কমতি নেই। কমতি শুধু কার্যকরী পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের।

মাঠের কথায় ফেরা যাক। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে থাকবে। কারণ এ রকম একটি দলকে এত বড় ব্যবধানে হারানোর সুযোগ সহসা আসবে না। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের যোগ্য নেতৃত্বে ইতিবাচক পারফরম্যান্স এই দলটিকে ভবিষ্যতে আরও লড়াকু একটি ইউনিটে পরিণত করতে সক্ষম।

শেষ ম্যাচ জিতলে টাইগাররা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। টিম ম্যানেজমেন্টের অবশ্য উচিত সৌম্য সরকারকে শেষ ম্যাচে বদলে অন্য কাউকে খেলানো।

এ বিভাগের আরো খবর