বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে টানা তিন ম্যাচে হারার পর জয়ের মুখ দেখল অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিকদের ৩ উইকেটে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের ব্যবধান ৩-১ করল অজিরা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ছয় বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় অতিথি দল।
এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অজিদের ২৩ রানে হারায় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেট এবং তৃতীয় ম্যাচে ১০ রানের জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শুরুতেই ফেরেন অজি অধিনায়ক ম্যাথিউ ওয়েড। দলীয় তিন রানে মাহেদী হাসানের ঘুর্ণি বুঝে ওঠার আগেই নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়েড।মাহেদীর দুর্দান্ত বোলিংয়ের শোধ সাকিবের ওপর দিয়ে তোলেন তিন নম্বরে নামা ড্যান ক্রিস্টিয়ান। সাকিবের করা চতুর্থ ওভার থেকে পাঁচটি ছক্কাসহ ৩০ রান তুলে নেন এই ব্যাটসম্যান। এই ওভারেই ম্যাচ জয়ের ভিত গড়ে অস্ট্রেলিয়া।
পরের ওভারে সফরকারী শিবিরে আঘাত হানেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে বেন ম্যাকডারমটকে আউট করেন নাসুম।
আগের ম্যাচগুলোর ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচেও জ্বললেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিবকে ৫ ছক্কা হাঁকানো ড্যান ক্রিস্টিয়ানকে ফেরান ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে। শামিম পাটোয়ারীর হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৫ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন ক্রিস্টিয়ান।
নিজের তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশকে দারুণ ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। রান আউট করেন মোয়েজেস এনরিকেসকে। অজিদের সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ৬০ রান।
সাকিবকে ছক্কা হাঁকাচ্ছেন ড্যান ক্রিস্টিয়ান। ছবি: এএফপি
এরপর ধস নামে অজি শিবিরে। দলের স্কোরশিটে ৫ রান যোগ করতেই সাজঘরে ফেরেন অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল মার্শ।
অতিথিদের চোখ রাঙ্গাচ্ছিল আরও একটি পরাজয়, তখন দায়িত্বশীল ব্যাটসম্যানের পরিচয় দেন অ্যাস্টন টার্নার ও অ্যাস্টন এইগার।
শরীফুলের বলে ২৭ রান করে এইগার বিদায় নিলে বাকি কাজটা সারেন ক্যারি এবং অ্যান্ড্রু টাই। শেষতক ৩ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অজিরা।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা কিছুটা ভালো করলেও সৌম্য সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সেটি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। দলীয় ২৪ রানে জশ হেইজেলউডকে পুল করতে গিয়ে অ্যালেক্স ক্যারির তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে আসেন এই ওপেনার।
সৌম্য আউট হওয়ার পর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। নাঈম শেখকে নিয়ে ধীরেসুস্থে খেললেও বেশিক্ষণ টেকেননি এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। দশম ওভারের পঞ্চম বলে হেইজেলউডের ডেলিভারিতে আউট হন সাকিব। ২৬ বলে ১৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
সাকিবের বিদায়ের পর বাংলাদেশ শিবিরে শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসনের স্পিনে ধসে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ।
১১তম ওভারে টানা দুই বলে রিয়াদ ও সোহানকে ফেরানোর পর ১৫তম ওভারে আবারও আঘাত হানেন তিনি। ১৫তম ওভারের তিন নম্বর বলে ওপেনার নাঈম শেখকে আউট করেন সোয়েপসন। দল তখন ১০০ রান পার না হওয়ার শঙ্কায়।
মিচেল সোয়েপসনের বলে আউট হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ছবি: এএফপি
বিপর্যয়ে থাকা বাংলাদেশের হয়ে কাউন্টার অ্যাটাকের সিদ্ধান্ত নেন আফিফ হোসেন। অ্যাস্টন এইগারের ডেলিভারিতে বল উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠানোর দুই বল পরই আউট হন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। ১৭ বলে ২১ রান করে আউট হন আফিফ।
শেষ দিকে মাহেদী হাসানের ১৪ বলে ২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ১০০ রান পার করে স্বাগতিক দল। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট খরচায় ১০৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
অজিদের পক্ষে ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন সোয়েপসন। ১৮ রানে ৩ উইকেট পান অ্যান্ড্রু টাই।