ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে নামে বাংলাদেশ। শুরুর বিপর্যয়ের পর তিন ফিফটিতে এখন স্বস্তিতে মুমিনুল হকের বাহিনী।
পরীক্ষিত তামিম ইকবালকে ছাড়াই আট বছরের জয়ের আক্ষেপ মেটানোর মিশনে নামে সফরকারী দল। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামস ও ক্রেইগ আরভিনকে ছাড়াই মাঠে নামে স্বাগতিকরা।
সকালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মুমিনুল। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একেবারে বাজে হয় বাংলাদেশের। শুরুতেই সাইফ, সাদমান, শান্ত, মুশফিক ও সাকিবের বিদায়ের পর ধ্বংসস্তুপ থেকে দলকে পথ দেখান মুমিনুল হক, লিটন দাস ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ফিফটি।
বল হাতে ব্লেসিং মুজারাবানি নেন তিনটি উইকেট। ডনাল্ড টিরিপানো ও ভিক্টর নিয়াউচি নেন দুটি করে উইকেট। একটি উইকেট পান রিচার্ড নাগারাভা।
প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৪ রান সংগ্রহ করে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
ইনিংসের শুরুটা হয় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। প্রথম পাঁচ ওভারে তারা হারায় ওপেনার সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট। ৪.২ ওভারে তাদের সংগ্রহ ছিল ৮/২।
ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ব্লেসিং মুজারাবানির ইন সুইঙ্গারে ফরোয়ার্ড খেলতে যেয়ে বোল্ড হন সাইফ। ৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় ডাক।
স্বাগতিক দলের দ্বিতীয় সাফল্য আসে পঞ্চম ওভারে। মুজারাবানির দ্বিতীয় বলে শট খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন নাজমুল।
অভিষিক্ত ডিওন মায়ার্স কোনো ভুল করেননি তা লুফে নিতে। ২ রান করে ফেরেন নাজমুল।
বিপদে পড়া বাংলাদেশকে কিছুটা সামাল দেন অধিনায়ক মুমিনুল হক ও ওপেনার শাদমান ইসলান। ৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর, তৃতীয় উইকেটে এই দুজন স্থিরতা দেন টাইগারদের।
১৫ ওভার ৫ বল খেলে জুটি ৬০ রান করেন মুমিনুল-শাদমান। শাদমানের বিদায়ে ভাঙ্গে জুটি।
৬৪ বলে ২৩ রান করে আউট হন টাইগার ওপেনার। রিচার্ড এনগারাভার বলে স্লিপে দাঁড়ানো ব্রেন্ডন টেইলরের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
সেখান থেকে দলকে মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত নিয়ে যান মুমিনুল ও মুশফিকুর রহিম। বিরতির সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৭০/৩। মুমিনুল ৩২ ও মুশফিক এক রান নিয়ে খেলছিলেন।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেও দলকে ভরসা দিচ্ছিলেন মুশফিক-মুমিনুল। বাংলাদেশ স্কিপার পূর্ণ করেন তার ১৪তম টেস্ট ফিফটি।
তাদের জুটি ৩৮ রানে পৌঁছালে আউট হন মুশফিক। ৩০ বলে ১১ রান করে মুজারাবানির বলে এলবিডব্লিউ হন সাবেক অধিনায়ক।
পরের ওভারেই বাংলাদেশকে ধাক্কা দেন ভিক্টর নিয়াউচি। সাকিব আল হাসানকে ৩ রানে কট বাহাইন্ড করেন এই মিডিয়াম পেইসার।
১০৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা।
৯৫ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস
সাকিবের আউটের পর লিটন দাসকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন মুমিনুল। সফল হয়নি তার প্রচেষ্টা। ৭০ রান করে নিয়াউচির বলে আউট হন তিনি।
১০৯ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন কক্ষচ্যুত, তখন ক্রিজে আসেন এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান। স্কিপার মুমিনুলের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের সংগ্রহ অব্যাহত রাখেন।অধিনায়ক ৭০ রান বিদায় নিলে মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যান এই ক্রিকেটার।
রিয়াদের সঙ্গে ধীরে ধীরে প্রথম সেঞ্চুরির পথেই এগোচ্ছিলেন। ৯৫ রানে তখনও অপরাজিত। টিরিপানোর শিকার হয়ে পাঁচ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন।
লিটনের বিদায়ের পর মিরাজ আসেন ক্রিজে। টিরিপানোর বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে শূন্য রানেই বিদায় নেন এই অলরাউন্ডার। এরপরে ফাস্ট বোলার তাসকিন আসেন ২২ গজে।
রিয়াদের সঙ্গে জুটি বেঁধে এখনও দলীয় সংগ্রহ নিয়ে যান ২৯৪ রানে। দীর্ঘ সময় পর লাল বলে ফিরে ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি তুলে নেন রিয়াদ।১৩ রানে অপরাজিত তাসকিন ও রিয়াদ ১৪১ বলে ৫৪ রানে লড়াই অব্যাহত রেখেছেন।