বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোনো অভিষেক মনের মতো হয়নি শরিফুলের

  •    
  • ১৫ মে, ২০২১ ১৯:১৬

রূপকথার গল্প হলে, সিরিজের প্রথম ম্যাচটা বাংলাদেশকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে সেরকম হয় না। প্রথম ম্যাচে চার ওভারে ৫০ রান দেন তিনি। পাননি কোনো উইকেট।

পঞ্চগড় থেকে উঠে আসা বাঁহাতি পেইসার শরিফুল ইসলামের স্বপ্ন ছিল, জাতীয় দলে খেলে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন। সেই স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছে যান ৪ জানুয়ারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজের প্রাথমিক দলে ডাক পেয়ে যান।

‘দুটি স্বপ্ন ছিল। সেগুলো পূরণের কাছাকাছি চলে এসেছি জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেয়ে। চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দিয়ে দলে থাকার জন্য। যেভাবে খেলে আসছি, সেভাবেই খেলে, ভালো পারফর্ম করে জাতীয় দলে থাকা,’ নিউজবাংলাকে বলেন তরুণ এ পেইসার।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই সিরিজে অভিষেক হয়নি শরিফুলের। সেটি হয় দেশ থেকে হাজার মাইল দূরের নিউজিল্যান্ডে। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে।

রূপকথার গল্প হলে, সিরিজের প্রথম ম্যাচটা বাংলাদেশকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়তেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে সেরকম হয় না। প্রথম ম্যাচে চার ওভারে ৫০ রান দেন তিনি। পাননি কোনো উইকেট।

প্রথম ম্যাচে বাজে করার পর ভেঙে পড়েননি শরিফুল। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নির্বাচক হাবিবুল বাশারের অনুপ্রেরণার পাশাপাশি নিজের বিশ্বাসও ছিল যে ফিরে আসতে পারবেন।

‘প্রথম ম্যাচ খেলার পর আমি নরমাল ছিলাম। পরে রিয়াদ ভাই এসে আমাকে বলল যে সমস্যা নেই, এরকম হয় প্রথম ম্যাচে। পরে সুমন স্যার (হাবিবুল বাশার) এসে আমাকে আরো কিছু ইতিবাচক কথা বলেছেন। তখন এসব খুব ভালোভাবে নিয়েছি। রিয়াদ ভাই বলেছেন যে বাংলাদেশকে লম্বা সময় সার্ভিস দিতে হবে। প্রথম ম্যাচে এমন হতেই পারে, সমস্যা নেই। পরের ম্যাচ ভালো হবে। পরের ম্যাচেই আমি কামব্যাক করি।’

পরের ম্যাচে দারুণ বোলিং করেন শরিফুল। নিউজিল্যান্ড ১৭৩ স্কোর করলেও শরিফুলের তিন ওভারে তারা নিতে পারে মাত্র ১৬ রান। সঙ্গে উইকেট পান ডেভন কনওয়ের।

ম্যাচে ভালো করার পর শরিফুলের মনে হতে থাকে, আরও ভালো কিছু করতে পারবেন তিনি।

২৮ মার্চ অভিষেকের আগের বছরটা অবশ্য গল্পের মতোই। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতার পর করোনার কারণে তেমন খেলতে পারেননি। প্রেসিডেন্টস কাপে ঝলক দেখালেও দারুণ কিছু করতে পারেননি।

সেটি করলেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের হয়ে নিজের আদর্শ মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে গড়েন দারুণ এক জুটি। ১০ ম্যাচে তুলে নেন ১৬ উইকেট। সেই টুর্নামেন্টের পর শরিফুলের মনে হতে থাকে, জাতীয় দলের ক্যাম্পে সুযোগ পাবেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে শরিফুল। ছবি: বিসিবি

‘যখন ওই টুর্নামেন্টে ভালো করেছি, তখন মনে করেছি যে আমাকে ক্যাম্পে ডাকবে। অন্যদের সঙ্গে থেকে আরও শেখার চেষ্টা করব। যখন ক্যাম্পে ডেকেছে তখন প্র্যাকটিসে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার এই আশা ছিল যে আমি ডাক পাব,’ আলাপচারিতায় বলেন শরিফুল।

টি-টোয়েন্টির পর টেস্ট অভিষেকও হয়ে গিয়েছে শরিফুলের। সেটিও দেশের বাইরে, শ্রীলঙ্কায়। সেখানেও অভিষেকটা ভালো হয়নি, দুই ইনিংস মিলিয়ে পেয়েছেন মাত্র এক উইকেট।

অভিষেক নিয়ে শরিফুলের মত, তার অভিষেকটাই কেনো যেন ভালো যায় না! ‘অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে আমার অভিষেক ম্যাচও ভালো যায়নি। চেষ্টা করি যে প্রথম থেকেই ভালো করার। সব অভিষেক ম্যাচই আসলে এরকম বাজে হয়ে গিয়েছে (হাসি)। কিন্তু আমি ওভাবে ভাবি না। প্রথম ম্যাচটা খারাপ খেলেছি তো পরে কী হবে। চেষ্টা থাকে প্রথম থেকেই ভালো করার।’

শরিফুলকে তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সাহায্য করে গেছেন তার কোচ ও বাংলাদেশের হয়ে দুটি টেস্ট খেলা সাবেক বাংলাদেশ পেইসার আলমগীর কবির। তার কোচের ভাগ্যে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে উইকেট জোটেনি। আর অভিষেকেই উইকেট পেয়েছেন শরিফুল। শিষ্যের খুশিতেই উচ্ছ্বসিত আলমগীর। এক জায়গায় অবশ্য মিলে গেছেন গুরু শিষ্য, দুজনের টেস্ট অভিষেকই শ্রীলঙ্কায়।

“আমার কোচ আলমগীর কবির টেস্ট প্লেয়ার ছিলেন। উনার যখন শ্রীলঙ্কায় অভিষেক হয়েছে তখন উনি উইকেট পাননি। তো আমার যখন অভিষেক হয় শ্রীলঙ্কায়, আমি তাকে ফোন দিয়েছিলাম। তখন উনি এত খুশি হয়েছে যে বলছিলেন যে ’আমার যেমন শ্রীলঙ্কায় হয়েছে, তোমারও হল। তুমি খেল। ভালো কিছু করবা।’”

সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ। শরিফুল আছেন ২৩ সদস্যের প্রাথমিক দলে। শরিফুল চান এই সিরিজেই অভিষেক হোক ওয়ানডেতেও। বাকি অভিষেক ম্যাচের মতো নয়, ওয়ানডে অভিষেকটা চান রাঙিয়ে রাখতে।

শেষ প্রশ্ন হিসেবে নিউজবাংলা শরিফুলের কাছে প্রশ্ন রেখেছিল ক্যারিয়ার নিয়ে তার স্বপ্নের ব্যাপারে। শরিফুল জানান, বিশ্বের সেরা বোলারদের একজন হতে চান তিনি। চান দেশের হয়ে লম্বা সময় খেলতে।

‘ফিট থেকে লম্বা সময় দেশকে সার্ভিস দিতে চাই। চাই বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার হতে,’ বলেন এ বাঁহাতি পেইসার।

এ বিভাগের আরো খবর