করোনাভাইরাসের প্রকোপে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪তম আসর মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। মঙ্গলবার বোর্ড জানায় খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের কথা মাথায় রেখে আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে আইপিএল।টুর্নামেন্টের ৬০টি ম্যাচের মধ্যে ২৯টি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিসিসিআই চেষ্টা করছে সেপ্টেম্বরে বাকি ৩১টি ম্যাচ আয়োজনের। ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ শেষে আয়োজন করা হতে পারে আসরের বাকি ম্যাচ, প্লে-অফ ও ফাইনাল।আইপিএলের চেয়ারম্যান ব্রিজেশ পাটেল ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান সব ধরনের সম্ভাবনা তারা খতিয়ে দেখছেন।‘আমরা নতুন একটা সময় খুঁজছি। পেলে সেটাকে অবশ্যই কাজে লাগাব। সেপ্টেম্বরে সম্ভব কি না, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। ওই সময়ে আইসিসি ও অন্যান্য দেশের বোর্ডগুলোর পরিকল্পনাও জানতে হবে।’নভেম্বরে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় দলগুলোর বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে সেপ্টেম্বর থেকেই। সে ক্ষেত্রে টি-টোয়েন্টির আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের পাবে কি না, আইপিএল সেটা নিয়েও রয়েছে সংশয়।আপাতত খেলোয়াড়দের নিরাপদে বাড়ি পাঠানোর দিকে বেশি মনোযোগী ভারতীয় বোর্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। শুধু ভারতীয় খেলোয়াড়দেরই নয় বিদেশি খেলোয়াড়দের নিরাপদে বাড়ি পাঠানোর জন্যে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করছে বিসিসিআই।অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের সব যাত্রীর জন্য নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ১৫ মে পর্যন্ত। সাউথ আফ্রিকায় বিদেশ ফেরত সবাইকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী।চলতি সপ্তাহে কলকাতা নাইট রাইডার্স, চেন্নাইস সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও দিল্লি ক্যাপিটালসের খেলোয়াড় ও সদস্যদের মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।সোমবার আইপিএলের দুই অন্যতম ফ্র্যাঞ্চাইজি কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) ও চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) সদস্যরা কোভিড আক্রান্ত হন। দুই খেলোয়াড় বরুণ চক্রবর্তী ও সানদিপ ওয়ারিয়রের কোভিড পজিটিভ হওয়ার কথা নিশ্চিত করে কেকেআর।সিএসকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাসি বিশ্বনাথন ও বোলিং কোচ লাক্সমিপতি বালাজি ও একজন বাস ক্লিনার পজিটিভ হন সোমবার। তারপর থেকেই দলের সদস্যদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বুধবার তাদের ব্যাটিং কোচ মাইকেল হাসির করোনা ধরা পড়ে। সানরাইজার্সের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা মঙ্গলবার সকালে কোভিড পজিটিভ হন। বুধবার আক্রান্ত হন দিল্লি ক্যাপিটালসের স্পিনার অমিত মিশ্রা।মিশ্রার আক্রান্ত হওয়ার আগে মঙ্গলবার আইপিএল স্থগিত ঘোষণা করে বিসিসি আই। এক বিবৃতিতে তারা জানায় করোনা মহামারির সময়ে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য নিয়ে বোর্ড আর ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না।‘আইপিএল আয়োজন করতে খেলোয়াড় ও অংশগ্রহণকারীদের সুরক্ষা নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না বিসিসিআই। সকলের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভারতে চলমান কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা চেষ্টা করেছি সবাইকে কিছুটা আনন্দ দিতে। কিন্তু এখন টুর্নামেন্ট স্থগিত করতেই হচ্ছে যাতে করে এই কঠিন সময়ে সবাই নিজেদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে থাকতে পারেন।’আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়েও বিক্লপ ভাবনা শুরু করেছে আইসিসি। নভেম্বরে নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী টুর্নামেন্ট ভারতে আয়োজন করা না গেলে, বিকল্প ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে প্রস্তুত রাখতে চান তারা।