পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় দিনে যখন ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ, দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৭৪।
সেখান থেকে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে পৌঁছে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা।
জবাবে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার শতরানের উদ্বোধনী জুটি এনে দিলেও, দিন শেষ হওয়ার আগে ৩ উইকেট হারিয়েছে তারা। তৃতীয় দিন শেষে তাই পাল্লেকেলেতে প্রথম টেস্টের চালকের আসনে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২২৯। বাংলাদেশের চেয়ে তারা পিছিয়ে ৩১৪ রানে, ফলো-অন এড়াতে তাদের এখনও চাই ১১৫ রান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে উইকেটে আছেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে ও ধনঞ্জয় ডি সিলভা। দুজনে অপরাজিত যথাক্রমে ৮৫ ও ২৬ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম।
লাহিরু থিরিমান্নেকে নিয়ে স্বাগতিকদের ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেন করুনারত্নে। সে জুটি ভাঙেন মিরাজ। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন ফিফটি ছোঁয়া থিরিমান্নেকে, রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।
তিনে নামা ওশাদা ফার্নান্দোকে ফেরান তাসকিন। তার ১১তম ওভারের তৃতীয় বলটি বেরিয়ে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। কিন্তু ওশাদা ফার্নান্দো চাইলেন সেটিতে ব্যাট ছুঁইয়ে চার বানাতে। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য। লিটন দাস বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে নেন দারুণ এক ক্যাচ।
দিনের তৃতীয় উইকেটটি নেন তাইজুল। রাউন্ড দ্য উইকেট এসে দারুণ এক আর্ম বলে বোল্ড করে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ফেরান সাজঘরে।
আরও কিছু সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। এবাদত হোসেনের বলে ধনঞ্জয়ের একটি ক্যাচ চলে গেছে স্লিপ ও গালির মধ্য দিয়ে। অথচ সেখান থেকে আগের বলেই দ্বিতীয় স্লিপ সরিয়ে নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।
তাইজুলের বলে করুনারত্নেকে আউট দেন আম্পায়ার। কিন্তু সে যাত্রা রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। এক বল পরেই বাংলাদেশ রিভিউ নিলে থার্ড আম্পায়ারের তাড়াহুড়োয় সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়নি সঠিক উপায়ে।
রিপ্লে দেখে মনে হচ্ছিল, ব্যাটে লাগার আগে করুনারত্নের বুটে লেগেছে বল। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার আল্ট্রাএজের সহায়তা তো নিলেনই না। বরং দুবার দেখেই বলে দিলেন, ব্যাটে লেগেছে তাই নট আউট! রিভিউটাও গচ্চা গেল বাংলাদেশের।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে দিন শেষ করতে হয়েছে তিন উইকেট নিয়েই। তবে ইতিমধ্যে পিচে স্পিনারদের জন্য সহায়তার আভাস পাওয়া গিয়েছে, তাতে নিশ্চয়ই খুশিই বাংলাদেশ দল!
এর আগে সকালে, ১৮ ওভার ব্যাট করে বাংলাদেশ যোগ করে ৬৭ রান। মুশফিকের পাশাপাশি ফিফটি তুলে নেন লিটন দাসও। কিন্তু ফিফটি ছোঁয়ার পরপরই বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে গালিতে ওশাদা ফার্নান্দোকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৫০।
মেহেদি হাসান মিরাজ ফেরেন মাত্র ৩ রানে। সুরাঙ্গা লাকমলের এক ওভারে দারুণ নাটক হয় মিরাজের উইকেট নিয়ে। প্রথমে একবার আম্পায়ার তাকে কট বিহাইন্ডে আউট দিলে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি। পরের বলেই আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নেয় শ্রীলঙ্কা। তাতে দেখা যায় ব্যাটে বল লাগেনি। বেঁচে যান মিরাজ।
তার ভাগ্য শেষ হয় এক বল পরেই। উইকেটকিপারের কাছে ক্যাচ দিয়েই লাকমলের বলে ফেরেন মিরাজ।
পুরো ইনিংস ধীরতালে ব্যাট করলেও একদম শেষ ভাগে আক্রমণের চেষ্টা চালান মুশফিক। ১৭৩ ওভার শেষ হওয়ার পর ইনিংস ঘোষণা করে দেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তাতে শেষ হয় ওভারের হিসেবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ইনিংস।