১৩ এপ্রিল, ১৯৯৭।
মালয়েশিয়ার তেনাগা ন্যাশনাল স্পোর্টস কমপ্লেক্সে সেবারের আইসিসি ট্রফির ফাইনালটা হওয়ার কথা ছিল ১২ এপ্রিল। বৃষ্টিবাধায় সেটি এসে পৌঁছায় ১৩ এপ্রিলে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে কেনিয়া তার আগে ব্যাট করে স্টিভ টিকোলোর দুর্দান্ত ১৪৭ রানের জবাবে তুলে ফেলে ২৪১ রান। জবাবে বৃষ্টি বাধা মিলিয়ে পরের দিন বাংলাদেশের লক্ষ্য ২৫ ওভারে ১৬৬ রান।
জিততেই হবে, বাংলাদেশের সামনে এমন কোনো লক্ষ্য ছিল না। কারণ ফাইনালে উঠেই ১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ফেলে টাইগাররা।
তবুও ফাইনাল বলে কথা! তাই বাংলাদেশ ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে দিল মোহাম্মদ রফিককে। নাইমুর রহমান শূন্য রানে ফিরলেও রফিক এনে দিলেন ১৫ বলে ২৬ রানের ঝড়ো শুরু।
সঙ্গে মিলল মিনহাজুল আবেদিন, আমিনুল ইসলাম ও অধিনায়ক আকরাম খানের ছোট ছোট ইনিংস।
তাতে করে শেষ ওভারে বাংলাদেশের চাই ১১ রান। উইকেটে খালেদ মাসুদ, সঙ্গে পেইসার হাসিবুল হোসেন। একটি ছয় মেরে বাংলাদেশকে জয়ের কাছে নিয়ে যান খালেদ মাসুদ। শেষ বলে দরকার ছিল মাত্র এক রান, স্ট্রাইক প্রান্তে তখন শান্ত। তিনি জানালেন, আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি।
‘নার্ভাস ছিলাম না। লক্ষ্য ছিল যে আউট হবো না, যেভাবেই হোক এক রান নিবোই। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। অন্য প্রান্ত থেকে পাইলট বলেছিল, বল মিস করে গেলেও দৌড়ে এক রান নেব,’ স্মৃতি রোমন্থন করে নিউজবাংলাকে বলেন হাসিবুল।
শেষ বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি তিনি। কিন্তু তাতে ক্ষতি হয়নি, প্যাডে লাগার পর ঠিকই রান নিয়ে নিয়েছিলেন মাসুদ ও হাসিবুল। তাতে বাংলাদেশের ঘরে আসে শিরোপা, আইসিসি ট্রফির শিরোপা।
রান নেয়ার পর অনুভূতির কথা জানান হাসিবুল, ‘ওই অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আইসিসি ট্রফির শিরোপা জয়, বিশ্বকাপ খেলা, সব মিলিয়ে অন্য রকম একটা অনুভূতি ছিল।’
সেই শিরোপা জয়ের পর একে একে কেটে গেছে ২৪ বছর। ১৯৯৯ এর পর বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলেছে আরও পাঁচটি।
কিন্তু প্রথম বার বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখার আয়োজনকে বাংলাদেশ যেভাবে সাজিয়েছিল আইসিসি ট্রফি দিয়ে, সেরকমটি আর হয়নি। আর হবে কোনো দিন, তার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।