১৫ মার্চ, ২০১৯। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তখন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে ক্রাইস্টচার্চে। শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে এগোচ্ছিলেন কয়েকজন ক্রিকেটার, তখনই তারা শোনেন গুলির শব্দ।
ভুল শোনেননি তারা। ব্র্যান্ডন ট্যারান্ট নামে এক শ্বেত আধিপত্যবাদীর হামলায় ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে প্রাণ হারান ৫১ জন।
সেই ঘটনার দুই বছর পূরণ হবে ১৫ মার্চ। কাকতালীয়ভাবে এখনও তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল, যিনি সেই হামলা থেকে বেঁচেছিলেন সামান্যের জন্য।
করোনাভাইরাস বাস্তবতায় নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ক্রাইস্টচার্চে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছে টাইগারদের। চারবার করোনা পরীক্ষায় সবাই নেগেটিভ আসার পরই অনুমতি মিলেছে স্বাভাবিক চলাচলের।
ইতিমধ্যে সেই ভয়াল স্মৃতির মসজিদের সামনে নিজের ছবি গত শুক্রবার ফেসবুকে পোস্টও করেছেন মুশফিকুর রহিম। লিখেছিলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে, এটিই ছিল সেই স্টেডিয়াম এবং সেদিন ছিল শুক্রবার।’
বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে ক্যাম্প করতে কুইন্সল্যান্ডে পৌঁছায় বাংলাদেশ দল। সেখানে বাংলাদেশ দলের হাতে শহরের একটি স্মারক তুলে দেন কুইন্সটাউনের মেয়র জিম বোল্ট।
বাংলাদেশ দলের সদস্য জালাল ইউনুসকে কুইন্সটাউনের স্মারক তুলে দিচ্ছেন শহরটির মেয়র জিম বোল্ট। ছবি: বিসিবি
সেখানে পৌঁছানোর পর এক প্রেস কনফারেন্সে বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে মুখোমুখি হতে হয় সেই ক্রাইস্টচার্চ হামলাবিষয়ক প্রশ্নের।
তামিম সেখানে বলেন, এই বিষয়টি তাদের জন্য খুব স্পর্শকাতর এবং এই বিষয়ে খুব বেশি গভীরে যেতে চান না তিনি।
‘আমাদের জীবনের খুব স্পর্শকাতর অংশ এটি। কাটিয়ে উঠত আমাদের লম্বা সময় লেগেছে। যেটা বলেছি, যারা আপনজন হারিয়েছেন, সেই পরিবারগুলোকে শ্রদ্ধা করতে হবে আমাদের। প্রার্থনা করতে হবে যেন তারা সহ্য করতে পারেন। আর খুব বেশি গভীরে যেতে চাই না এই ব্যাপারটির। কারণ, এই অনুভূতি খুব ভালো নয়। এখানে বারবার আসার মতো যথেষ্ট ভালো কিছু নিউজিল্যান্ড আমাদের উপহার দিয়েছে এবং আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতেও আসতে কোনো দ্বিধা থাকবে না আমাদের। ওই একটি ঘটনা ছাড়া, নিউজিল্যান্ড সব সময়ই দারুণ ছিল’, বলেন তামিম।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডেনের প্রশংসাও করেন তামিম। বলেন, কখনও দেখা করার সুযোগ হলে তাকে ধন্যবাদ জানাবেন তিনি।
‘আমি এই নিয়ে চতুর্থ বা পঞ্চমবার এলাম নিউজিল্যান্ডে। সব সময়ই এই দেশে আসতে মুখিয়ে থাকি আমরা। খুবই সুন্দর একটি দেশ। এখানকার মানুষরা ভালো। এখানকার প্রধানমন্ত্রীর কথাও বলতে চাই, ওই কঠিন সময় তিনি যেভাবে সামলেছেন, বাংলাদেশের সবাই বাহবা দিয়েছে। তিনি দারুণ কাজ করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে কখনও তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হলে আমি তাকে ধন্যবাদ জানাব’, বলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
কুইন্সটাউনে পাঁচ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পর ১৬ মার্চ ডানেডিনে যাবে পুরো দল। সেখানেই ২০ মার্চ হবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।