প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অল্প রানে গুটিয়ে দিলেও আকিল হোসেনের স্পিন সেই রান তাড়া করতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয় বাংলাদেশকে।
দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য তেমন কিছু আর হলো না। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ১৪৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ফিফটি ও সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৪৩ রানের ইনিংসে হেসেখেলে সাত উইকেটের জয় তুলে নেয় টাইগাররা। ১০০ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে সিরিজও বাংলাদেশের।
ম্যাচ সেরা হন মেহেদি হাসান মিরাজ।
এই নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে শেষ আট ম্যাচের ছয়টিতে জয় পেল বাংলাদেশ। নিজেদের শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে অপরাজিত বাংলাদেশ।
মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারের সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিবের জোড়া আঘাতে মাত্র ১৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় বড় স্কোর আর গড়া হয়নি ক্যারিবিয়দের। ৮৮ রানেই আট উইকেট হারিয়ে এক সময় সম্ভাবনা ছিল দুই অংকেই গুটিয়ে যাওয়ার।
শেষ দিকে রভম্যান পাওয়েল দুই টেইল এন্ডার আলজারি জোসেফ ও আকিলকে নিয়ে ছোট দুটি জুটি গড়ে ১৪৮ রানে পৌঁছে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
জবাবে তামিম ও লিটন ভালো শুরু করলেও ষষ্ঠ ওভারেই ভাঙে তাদের জুটি। ২২ রানে লিটনকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তাকে ফেরান আকিল হোসেন।
নাজমুল হোসেন শান্ত ভালো শুরু করলেও ১৭ রানে বাজে শটে আউট হন তিনি। জেসন মোহাম্মদের করা একটি শর্ট বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে বসেন শান্ত। তবে ততক্ষণে ৪৭ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে বেশ সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে গেছেন তামিম-শান্ত।
সাকিবের সঙ্গে ছোট একটি জুটি গড়েন তামিম, যেখানে ৭৫ বলে তুলে নিজের ৪৮তম ফিফটি তুলে নেন তামিম। এই সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ১০০০ রানও অতিক্রম করেন তামিম।
কিন্তু ফিফটি ছোঁয়ার পরের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেখান থেকে অবশ্য আর কোনো ধাক্কা খায়নি বাংলাদেশ। সাকিব ও মুশফিকুর রহিম মিলে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে।
৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। ছবি: বিসিবি
সাকিব ৪৩ ও মুশফিক নয় রানে অপরাজিত থাকেন।
এই জয়ে ওয়ার্ল্ড সুপার লিগে শুরুটা ভালো করল বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে দুই জয় দিয়ে ২০ পয়েন্ট টাইগারদের সংগ্রহে।
প্রথম ইনিংসের শুরুতে ভিন্ন কিছু হয়নি। ম্যাচের পঞ্চম ওভারে মুস্তাফিজের কাটারে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সুনিল আমব্রিস।
পাওয়ারপ্লেতে আর উইকেট না হারালেও সেটি শেষ হওয়ার পর শুরু হয় মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের স্পিন জাদু। একই ওভারে মিরাজ ফেরান কিয়র্ন ওটলি ও জশুয়া ডা সিলভাকে।
পরের ওভারেই সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বোল্ড হন আন্দ্রে ম্যাকার্থি।
ওভার দুয়েক পরে রান আউটের ফাঁদে কাটা পড়েন আগের ম্যাচে উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করা কাইল মায়ার্স।
সাকিব ক্যারিবিয় অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ফেরানোর পরের ওভারে এনক্রুমাহ বোনারকে ফিরিয়ে সফরকারীদের সাত নম্বর উইকেটের পতন ঘটান হাসান মাহমুদ।
৩০ তম ওভারে রেমন রাইফারকে পরাস্ত করে তার প্যাডে মিরাজের বল আঘাত করলেও, সাড়া দেননি আম্পায়ার। বাংলাদেশ রিভিউ নিলে দেখা যায়, আউটই ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য হন আম্পায়ার।
এরপর জোসেফ ও পাওয়েলের ৩২ রানের জুটিতে ১২০ রানে পৌঁছে উইন্ডিজ। সেই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। দারুণ এক কাটারে গালিতে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান জোসেফকে।
আকিলের সঙ্গে পাওয়েলের জুটি ক্যারিবিয়দের স্কোর বাড়াতে থাকে ধীরে ধীরে। খুব বেশি বিপদ তৈরির আগেই আকিলকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে সফরকারীদের ১৪৮ রানে গুটিয়ে দেন মিরাজ।
২৫ রান দিয়ে চার উইকেট - এটিই মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। এর আগে যে ২৯ রানে চার উইকেট ছিল তার সেরা। সেটিও ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই, ২০১৮ সালে।
মুস্তাফিজ ও সাকিব দুজন শিকার করেন দুটি করে উইকেট। হাসান মাহমুদ পান একটি উইকেট এবং রুবেল হোসেন টানা দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেট শূন্য থাকেন।