মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরের নেটে তখন চলছে টাইগারদের ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। সেখানেই হঠাৎ দেখা গেল অভিনব এক চিত্র।
বোলিং করার আগে বাংলাদেশ দলের অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন, যাকে সবাই ডাকেন ‘শ্রীনি’ নামে, তাকে সাকিব আল হাসান বললেন তার বোলিংয়ের ভিডিও করতে। বল করার পর সাকিব ফিরে এলেন শ্রীনির কাছে, বোলিং নিয়ে কাটাছেঁড়া হলো খানিকটা। এভাবেই নেটে বোলিং করলেন কিছুক্ষণ।
তাতে স্পষ্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজে ভালো করতে মুখিয়ে আছেন সাকিব।
এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব ফিরেছিলেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে। সেখানে ব্যাট হাতে রান পাননি, বল হাতেও ছিল না আগের ধার। নয় ইনিংসে করেছিলেন ১১০ রান, উইকেট পেয়েছিলেন ছয়টি।
বোলিং নিয়ে কাটাছেঁড়ার পাশাপাশি সাকিব ব্যাটিং নিয়েও কাজ করেছেন বেশ দীর্ঘ সময়। ব্যাটিংয়ে প্রথমে খেললেন পেসারদের, এরপর খেললেন থ্রোয়ারদের, শেষে স্পিনারদের। পরে কাজ করেছেন রানিং বিটুইন দ্য উইকেট নিয়েও।
সাকিবের বিরুদ্ধে অনুশীলনে তেমন পরিশ্রম না করার অভিযোগ ছিল অনেক দিনের। তবে এই অভিযোগ ঝেড়ে ফেলেছেন দেশসেরা ক্রিকেটার। বদলে যান ২০১৯ সালের শুরু থেকে। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে ভালো করতে না পারায় সাকিব যেন এখন আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাধ্যতামূলক অনুশীলন তো বটেই, ঐচ্ছিক অনুশীলনেও সময় দিচ্ছেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ সামনে রেখে দেশে এসে সাকিব বলেছিলেন, সফরকারীদের বিপক্ষে ভালো না করাটা হবে হতাশার। সেই হতাশার মুখোমুখি না হওয়ার জন্যই হয়ত সাকিবের এত পরিশ্রম!
সাকিবের মতই ঘাম ঝড়াচ্ছেন পুরো দলের ক্রিকেটাররা। তিন ঘন্টার অনুশীলনে সব দিক নিয়েই কাজ করছেন তারা। পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন ও ব্যাটিং কোচ জন লুইসকে না পেলেও নিজেদের প্রস্তুতিতে কোনো কমতি রাখছে না টাইগাররা।
দুই কোচের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যেও ছিলেন একজন অনুপস্থিত। প্রথমবারের মত জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পাওয়া পারভেজ হোসেন ইমন ছিলেন না অনুশীলনে।
আবার ফিরে এসেছে তার পুরনো কুঁচকির সমস্যা। সাত দিনের বিশ্রাম দেয়া হয়েছে তরুণ এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। এই চোটে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে গেল তার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের আগে অনুশীলনে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। ছবি: বিসিবিসোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ অনুশীলন শুরু করে বাংলাদেশ দল। প্রথমে গা গরম, এরপর কিছুক্ষণ চলল ফিল্ডিং অনুশীলন। সেই সময়ে উইকেটকিপিং গ্লাভস নিয়ে বেশ নিবিড় সময় পার করলেন মুশফিকুর রহিম। লিটন দাস তখন ফিল্ডিং অনুশীলনে ব্যস্ত। তাতে নিশ্চিত হয়ে যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অন্তত ওয়ানডেতে উইকেটের পেছনে থাকছেন মুশফিকই।
স্লিপ ফিল্ডিং নিয়েও কাজ করেছে বাংলাদেশ দল। মুশফিকের পাশে স্লিপ কর্ডনে সেখানে মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির আলি রাব্বি ও সৌম্য সরকার।
ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের মতে দলের সবাই সুস্থ ও সতেজ আছেন। প্রেসিডেন্টস কাপ ও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টির মধ্য দিয়ে টাইগারদের প্রস্তুতিও ভালো হয়েছে বলে মনে করছেন এই সাউথ আফ্রিকান কোচ।
‘আমার মনে হয় তারা বেশ কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ পেয়েছে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে। পঞ্চাশ ওভারের টুর্নামেন্টের সময় আমি এখানে ছিলাম এবং সেখানে তাদের ফিল্ডিং খুবই প্রশংসনীয় ছিল। সবারই বেশ সুস্থ, সতেজ এবং প্রস্তুত থাকার কথা।’