৪, ৯, ২, ০, ৪, ০, ৮, ৪, ০, ৪, ১ পাশাপাশি সংখ্যাগুলো দেখলে কারও কাছে মোবাইল বা টেলিফোন নাম্বার মনে হতে পারে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এটি ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের স্কোর। অ্যাডেলেইড টেস্টের তৃতীয় দিন তারা অলআউট হয়েছে নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৩৬ রানে। দুই অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার জশ হেইজলউড ও প্যাট কামিন্সের বোলিংয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় কাগজে-কলমে ‘বিশ্বসেরা’ ব্যাটিং লাইনআপ।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে এক উইকেটে ৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সকালের সেশনে কামিন্স ও হেইজলউডের বোলিংয়ের কোনো জবাব ছিল না ভারতের কাছে। ১৫ রানে দিনের প্রথম ও নিজেদের দ্বিতীয় উইকেট হারায় সফরকারী দল।
নাইটওয়াচম্যান জাসপ্রিত বুমরাহ দুই রান করে কামিন্সের বলে তাকেই ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন। এরপরই শুরু হয় ভারতের অবিশ্বাস্য ধস!
শূন্য রানে চার উইকেট হারায় ভিরাট কোহলির দল। ১৫/১ থেকে ১৫/৫ হয় তারা মাত্র ৫ ওভারে। চেতেশ্বর পুজারা ও আজিঙ্কা রাহানে আউট হন শূন্য রানে। পুজারা আউট হন হেইজলউডের বলে আর কামিন্স ফেরান রাহানেকে। মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে ৯ রানে প্যাভিলিয়ানের পথ দেখান হেইজলউড।
ভারত ষষ্ঠ উইকেট হারায় ১৯ রানে। সিরিজে নিজের শেষ ইনিংসে অধিনায়ক কোহলিকে চার রানে থামান কামিন্স। এর আগে টেস্ট ম্যাচে কখনই এতো কম রানে ৬ উইকেট হারায়নি। এর আগে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ডারবানে ২৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল তারা। ১৯৯৬ সালের সেই ম্যাচে ৬৬ রানে অলআউট হয় ভারত।
সেখানেই থামেনি কামিন-হেইজলউডের ধ্বংসযজ্ঞ। ১৯তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ঋদ্ধিমান সাহাকে চার ও রভিচন্দ্রন আশউইনকে শূন্য রানে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান হেইজলউড। আশউইনকে আউট করে টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে দেন এই ফাস্ট বোলার। পরের বলে হ্যাটট্রিক ঠেকান উমেশ ইয়াদাভ।
হেইজলউড নিজের পঞ্চম উইকেট শিকার করেন পরের ওভারের প্রথম বলে। হানুমা ভিহারিকে আউট করে টেস্টে অস্টম ‘ফাইভ-ফর’ অর্জন করেন তিনি। সেই সময় তার বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ৫-৩-৩-৫!
ভারত টেস্টে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় পড়ে ২২তম ওভারে। কামিন্সের দ্বিতীয় বলে ডান হাতে আঘাত পান মোহাম্মদ শামি। এরপর তাকে কিছুক্ষণ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও তার পক্ষে আর ব্যাট করা সম্ভব হয়নি। হেইজলউড ৮ রানে পাঁচটি আর কামিনস ২১ রানে চার উইকেট নেন।
ফলে, টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের সবচেয়ে কম রানের ইনিংস নিশ্চিত হয় কোহলির দলের। এর আগে ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪২ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত।গত ৬৫ বছরে এটি টেস্ট ক্রিকেটে সর্বনিম্ন রানের দলীয় ইনিংস। ১৯৫৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৬ রানে গুটিয়ে যেয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ে নিউজিল্যান্ড। যেটি অক্ষুন্ন আছে।এ ছাড়া ৩৬ রান সবমিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের পঞ্চম সর্বনিম্ন স্কোর। ১৯৩২ সালে সাউথ আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একই স্কোরে অলআউট হয়। তারও ৩০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া ৩৬ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮৯ রানের লিড নেয় ভারত। অস্ট্রেলিয়ার সামনে টেস্ট জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯০।