হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শুরু থেকে খেলতে পারেননি মাশরাফি মোর্ত্তজা। যতদিনে লটারিতে দল হিসেবে পেলেন জেমকন খুলনাকে, ততদিনে গ্রুপ পর্বের ছয় ম্যাচ শেষ।
প্রথম দুই ম্যাচে তেমন আহামরি কিছু করতে পারলেন না। কিন্তু কে জানতো, জাদুটা লুকিয়ে রেখেছিলেন কোয়ালিফায়ারের জন্য!
কোয়ালিফায়ারে জিতলে সোজা ফাইনালে - এমন সমীকরণ নিয়েই গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের মুখোমুখি হয়েছিল খুলনা। আর এই ম্যাচেই বেরিয়ে এলো মাশরাফির বুড়ো হাড়ের ভেলকি।
দিন তারিখ হিসেব করে বসলে, সোমবার মাশরাফির বয়স ৩৭ বছর ৭০ দিন। পুরো ক্যারিয়ারে না পাওয়া পাঁচ উইকেট মাশরাফি এদিন পাবেন এমন বাজি ধরার লোক পাওয়া মুশকিল ছিল।
কিন্তু মাশরাফি পেলেন। শুধু পাঁচ উইকেট পেলেন না, এমন ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়ে দিলেন, যাদের বিদায়ে চট্টগ্রামের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়ে হারতে হয় ৪৭ রানে।
শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। প্রথম বলে লিটন দাস মিসটাইমিং করে বল বাতাসে তুলে দিলেও সেটি শেষ পর্যন্ত হয় চার। এরপর তৃতীয় বলেই লিটনের কাছে খান ছয়।
তবে সেই ওভারের শেষ বলেই আগের দুই ম্যাচেই ফিফটি হাকানো সৌম্য সরকারকে মিড-উইকেটে শামিম পাটোয়ারির ক্যাচ বানিয়ে শুরু উইকেট প্রাপ্তির। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে ছত্রভঙ্গ করলেন লিটন দাসের স্টাম্প।
মোহাম্মদ মিঠুন ও মাহমুদুল হাসান জয়ের জমে ওঠা জুটিটা ভাঙলেন পরের স্পেলে। ইমরুল কায়েসের ক্যাচ বানিয়ে ফেরালেন জয়কে।
আর নিজের শেষ ওভারে এসে ফেরালেন খুলনার বিপক্ষে চট্টগ্রামের আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক শামসুর রহমানকে, এক বল পরেই মুস্তাফিজুর রহমানকে।
তাতে বোলিং ফিগারটা দাঁড়ালো, ৪-০-৩৫-৫! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চার উইকেটকেই বিরাট প্রাপ্তি হিসেবে ধরা হয়, সেখানে পাঁচ উইকেট নিঃসন্দেহে অসাধারণ।
আরেকটি মাইলফলকও ছুঁয়েছেন সাবেক এই বাংলাদেশ অধিনায়ক। লিটনের উইকেটের মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৫০ উইকেট স্পর্শ করেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।
ফাইনালে পৌছে গিয়েছে খুলনা। আপাতত অপেক্ষা প্রতিপক্ষ কে হবেন সেটির জন্য। তবে খুলনা চাইবে, মাশরাফি বুড়ো হাড়ের ভেলকি সেদিনও দেখাবেন।