বুড়ো হাড়ের ভেলকি আর কাকে বলে! দিন তারিখ গুনে দেখলে মাশরাফি মোর্ত্তজার বয়স সোমবারে ৩৭ বছর ৭০ দিন। অথচ তার কাছেই রীতিমত ধসে পড়ল উড়তে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।
মাশরাফির পাঁচ উইকেটেই দিশা খুঁজে পেল না তারা। ২১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গুটিয়ে গেল ১৬৩ রানে।
তাতে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম কোয়ালিফায়ারে ৪৭ রানের বড় জয় দিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল জেমকন খুলনা।
পরাজিত চট্টগ্রাম মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে এলিমিনেটরে বিজয়ী বেক্সিমকো ঢাকার।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ২১০ রানের বিশাল সংগ্রহ করে খুলনা। খুলনার বড় সংগ্রহের পেছনে দারুণ ভূমিকা পালন করেছেন জহুরুল ইসলাম ও তাদের মিডল অর্ডার। জহুরুলের ৮০ রানের ইনিংসকে দারুণ সহায়তা করেন ইমরুল কায়েস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান।
ইমরুল করেন ১২ বলে ২৫ রান, অন্যদিকে সাকিব টুর্নামেন্টে প্রথমবার ২০ রানের ঘর পেরিয়ে ২৮ করেন ১৫ বলে।
আর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ? মাত্র নয় বলে তিনি করেন ৩০, যেখানে ছিল দুটি চার ও তিনটি ছয়। আর তাতে প্রথম দশ ওভারে ৮৫ রান তোলা খুলনা পরের দশ ওভারে তুলল ১২৫। আর তাতেই তারা চড়ে রানের পাহাড়ে।
২১১ রান তাড়া করতে নেমে কখনই ম্যাচে ছিল না চট্টগ্রাম। প্রথমেই ওভারেই তারা হারায় আগের দুই ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো সৌম্য সরকারকে।
লিটন দাস কাউন্টার অ্যাটাক চালালেও, মাশরাফির কাটারে পর্যদুস্ত হয়ে স্টাম্প ছত্রভঙ্গ হয় তার। ছন্দে থাকা দুই ওপেনারকে চার ওভারের মধ্যে হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায় চট্টগ্রাম।
৭৩ রানের জুটিতে সেই বিপদ অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও মাহমুদুল হাসান জয় কাটিয়ে উঠলেও আস্কিং রেট থেমে থাকেনি। বাড়তে থাকা আস্কিং রেটের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়েই জয়ের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় চট্টগ্রাম।
জয়কে মাশরাফি বিদায় করার পর মিঠুনকে ফেরান আরিফুল হক। সাকিব মোসাদ্দেককে এবং হাসান মাহমুদ সৈকত আলিকে ফেরানোর পর কার্যত শেষ হয়ে যায় ম্যাচ।
নিজের শেষ ওভারে এসে শামসুর রহমান ও মুস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে নিজের পাঁচ উইকেট শিকার করেন মাশরাফি। শেষ ওভারে শরিফুলকে আউট করে চট্টগ্রামকে ১৬৩ রানে গুটিয়ে দেন আরিফুল হক।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে চমৎকার শুরু পায় খুলনা। জাকির হাসান ও জহুরুল মিলে ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন, যেখানে জাকির ছন্দ খুঁজে না পেলেও রানের চাকা সচল রেখেছিলেন জহুরুল।
কিন্তু জাকিরের বিদায়ের পর, সব ব্যাটসম্যানই রীতিমতো খুনে মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। প্রতিটি জুটিই রান এগিয়ে নিয়েছেন।
বিশেষ করে মাহমুদুল্লাহ। শরিফুল ইসলামকে টানা তিনটি ছয় মেরে দলের রান রেটকে এগিয়ে নেন, এরপর সেখান থেকে শেষ ওভার পর্যন্ত চালিয়ে যান সাকিব।
শেষ ওভারে সাকিব বিদায় নিলেও, মাশরাফি মোর্ত্তজার ছয়ে ২১০ রানে পৌছায় খুলনা।
চট্টগ্রামের হয়ে দুটি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। একটি করে উইকেট পান মোসাদ্দেক হোসেন ও সঞ্জিত সাহা।