বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে দিনের প্রথম ম্যাচে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে ২২১ রান তাড়া করে জিতেছিল ফরচুন বরিশাল।
জেমকন খুলনা ও গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচে তেমন রানবন্যা ছিল না। কিন্তু ছিল ঢের বেশি উত্তেজনা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে খুলনা সংগ্রহ করে ১৫৭। সেই লক্ষ্য তাড়ায় নেমে, শেষ তিন ওভারে চট্টগ্রামের চাওয়া ছিলো ৩৭। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ চট্টগ্রামের হলো শামসুর রহমানের ব্যাট থেকে আসা ছয়ে।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামার পর ধীরস্থির শুরু করে খুলনা। পঞ্চম ওভারে ওপেনার জাকির হাসানকে ফিরিয়ে ৩৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ওভার দুয়েক পর একই বোলারের শিকার হয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার জহুরুল ইসলামও।
চমক হিসেবে খুলনা চার নম্বরে নামায় মাশরাফি মোর্ত্তজাকে। টুর্নামেন্টে সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়কের এটিই ছিল প্রথম ম্যাচ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে।
স্ট্রাইকে থাকা সাকিব আল হাসান বল মেরেছিলেন সোজা। সেই সোজা বলই বোলার রকিবুল হাসানের হাতে লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। ততক্ষণে ক্রিজে ফিরতে পারেননি নন স্ট্রাইকে থাকা মাশরাফি। এতদিন পর মাঠে নেমে মাশরাফিকে ফিরতে হয় মাত্র এক রানে।
মোসাদ্দেক হোসেনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিব ১৫ রানে ধরা পড়েন মিড উইকেট বাউন্ডারিতে। এরপর ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস।
চার বলের ব্যবধানে দুজনই ফিরে গেলে ভালো স্কোর গড়ার পথ থেকে ছিটকে যান তারা। কিন্তু শেষদিকে শুভাগত হোমের ১৪ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ১৫৭ রানে পৌছায় খুলনা।
চট্টগ্রামের সেরা বোলার ছিলেন শরিফুল, ৩৪ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন তিনটি উইকেট। দুটি উইকেট পান মুস্তাফিজুর রহমান ও একটি উইকেট পান জিয়াউর রহমান।
জবাবে ছন্দে থাকা লিটন দাসকে দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় করেন সাকিব। নিয়মিত উইকেট হারানো চট্টগ্রামও পারেনি কোন জুটি গড়তে। সর্বোচ্চ জুটি তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও সৌম্য সরকারের ৩৩।
সেই সৌম্যও ফেরেন সাকিবের বলে। ছোট ছোট কয়েকটি জুটি গড়ে ফিরে যান মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন ও জিয়াউর রহমান। মোসাদ্দেককে বোল্ড করে টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন মাশরাফি।
তবে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে শামসুরের জুটি। ১৫ বলে ২৯ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে আসে তারা, বিশেষ করে শুভাগতর করা ১৯তম ওভারে।
সেই ওভারের আগে চট্টগ্রামের প্রয়োজন হয় দুই ওভারে ২৫ রান। কিন্তু শুভাগতকে দুই ছয় মেরে ম্যাচ চট্টগ্রামের হাতে নিয়ে আসেন নাহিদুল। শেষ বলে আউট হন ১০ বলে ১৮ করে।
শেষ ওভার করতে আসেন আল-আমিন হোসেন। প্রথম বলটা মুস্তাফিজুর রহমান মিস করেন। দ্বিতীয় বল ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে পৌঁছে যায় বাউন্ডারিতে।তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নেবার পর, স্ট্রাইকে গিয়ে সিঙ্গেল নেন শামসুর। তবে ম্যাচটা খুলনা হারায় তার পরের বলে।
আল-আমিনের বলটি ব্যাটে লাগাতে পারেননি মুস্তাফিজ, কিন্তু তবুও রান নেবার জন্য দৌড় দেন শামসুর। উইকেটকিপার জাকির হাসান স্টাম্পে লাগাতে পারলেই আউট হতেন শামসুর। ম্যাচ খুলনার জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যেত বহুগুণে।
কিন্তু জাকির পারলেন না। সেই বলে স্ট্রাইক ফিরে পাওয়ার পর শেষ বলটা স্কয়ার লেগ দিয়ে সীমানাছাড়া করে দলকে জয় পাইয়ে দেন শামসুর।
খুলনার হয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন সাকিব ও শুভাগত, একটি করে উইকেট পান আল-আমিন ও মাশরাফি।
এই জয় দিয়ে প্লে-অফে জায়গা নিশ্চিত হয়েছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের। আপাতত পাঁচ জয় নিয়ে শীর্ষে আছে তারা।