বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাকিব হওয়া কঠিন

  •    
  • ২৫ অক্টোবর, ২০২০ ১১:০৯

ফুরাচ্ছে অপেক্ষার প্রহর। জুয়াড়িদের প্রস্তাব গোপন করায় আইসিসি এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে সাকিবকে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে ২৮ অক্টোবর। সাকিবের ফিরে আসা উপলক্ষে নিউজবাংলার বিশেষ এই আয়োজন। আজ থাকছে সাকিবকে নিয়ে তার শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের মূল্যায়ন।

১৪ বছর বাংলাদেশ জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ সাকিব আল হাসান। এই দেড় যুগে বদলেছে তার সতীর্থ, বদলেছে অধিনায়ক, বদলেছে দেশের ক্রিকেটের সংস্কৃতি। বদলায়নি একটি বিষয়; সাকিবের ধারাবাহিকতা।

অনেক ঝড়-ঝাপটার ভেতর দিয়ে গেছে সাকিবের ক্যারিয়ার। কিন্তু কোনোবারই পারফরম্যান্সে পড়েনি এর ছাপ। মাঠের বাইরে যা কিছুই ঘটুক না কেন, মাঠের ভেতরে সাকিব যেন ‘আয়রন ম্যান’।

কীভাবে তৈরি হলেন এমন সাকিব? নিউজবাংলা সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় সাকিবের বিকেএসপির গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে। এখনকার বিশ্বসেরা তারকাকে শৈশব থেকে দেখা এই ক্রিকেট কোচ জানালেন মানসিকতাই আলাদা করেছে সাকিবকে।

তিনি বলেন, ‘এমনি ওকে আলাদা করাটা কঠিন। মানে দূর থেকে। কিন্তু কাছে আসলে বোঝা যায়, ওর দৃঢ় সংকল্প কিংবা ওর লক্ষ্য নির্ধারণ করার যে ব্যপারগুলো। ও খুব উঁচু লক্ষ্য ঠিক করে এবং যেটা ঠিক করে সেটা করতে চায়।’

সাকিবের বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল হাবিবুল বাশারের অধিনায়কত্বে। সাবেক এই অধিনায়ক ও বর্তমান নির্বাচক অন্যদের চেয়ে কোথায় এগিয়ে সাকিব, সেই বিষয়ে না বলে বরং বললেন সাকিবের শক্তির কথা।

‘সাকিবের সাথে অন্য কোনো খেলোয়াড়ের তুলনায় আমি যাব না। সাকিব যখন থেকে শুরু করেছে, তখন থেকেই বলা হয়েছে যে ছেলেটা বড় ক্রিকেটার হবে। শুধু ওর স্কিল দিয়ে না, মেন্টাল অ্যাটিটিউডেও। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারফর্ম করতে হলে এক্স-ফ্যাক্টর লাগে। ওর মধ্যে তখন এক্স-ফ্যাক্টর দেখা গিয়েছিল’, বলেন এই সাবেক অধিনায়ক।

সাকিবের মানসিকতা অন্যদের চেয়ে কেন আলাদা সেটারও ব্যাখ্যা দিয়েছে ফাহিম। তার মতে, রেজাল্টের চেয়ে প্রসেস গুরুত্বপূর্ণ সাকিবের কাছে।

তিনি বলেন, “আমি (সাকিবকে) জুনিয়র লেভেল থেকে দেখছি। ওর মধ্যে ব্যর্থতার ভয় ব্যাপারটি কম। যে কারণে, ও যখন কোনো কাজ করে, ফলাফলের চেয়ে প্রসেসটার ওপর ওর মনোযোগ বেশি থাকে। সাধারণত আমরা ‘কী হবে’ সেটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি। কাজটা অনেক সময় গোলমাল করে ফেলি। ও যখন যে কাজটা করে, ও সেখানে ওর মনোযোগটা দিতে পারে; ওর চেষ্টার সবটুকু ওই জায়গায় থাকে।

“যেকোনো স্পোর্টসম্যানের জন্যই এটি খুব কঠিন কাজ এবং দারুণ একটি শক্তির জায়গা। তাতে আমি পিছনে যে খারাপ করে এসেছি এবং সামনে যে ফলাফল খারাপ হতে পারে, সেটি থেকে মুক্ত থাকতে পারি। আমার পুরো প্রচেষ্টা, আমার শতভাগ আমি আমার বর্তমানকে দিতে পারি। সেটা সবার পক্ষে সম্ভব না এভাবে চিন্তা করা। এভাবে বর্তমানে বেঁচে থাকা। এটা সাকিবের অনেক বড় শক্তি।”

বাশার মনে করিয়ে দিলেন একেবারে মৌলিক একটা তত্ত্ব। প্রতিভা বা পারদর্শিতা যতই থাকুক না কেন, পরিশ্রম ছাড়া সফলতা ধরা দেবে না। সাকিবের সেই পরিশ্রম অনেক সময় ঢাকা পড়ে তার তারকা খ্যাতির আড়ালে, এমনটাই মনে করেন বাশার।

তিনি বলেন, ‘সে অত্যন্ত পরিশ্রমী, যেটা অনেকেই বোঝে না। নিজের খেলাটা খুব ভালো বোঝে সে, যেটা বড় ক্রিকেটারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোই কিছু কারণ, যেগুলোর জন্য ও এত সফল। সবচেয়ে বড় যে বিষয় ওর সেটি হলো ভালো করার ক্ষুধাটা অসম্ভব বেশি ওর।’ আরও পড়ুন: সাকিবের টেস্ট দুর্ভাগ্য

 

সাকিব আল হাসানের মতো ক্রিকেটার সবাই হতে পারেন না। তিন-চার বছর পর সাকিব অবসর নিলে তার বদলি কে হতে পারেন সেই চিন্তায় এখনই গলদঘর্ম হন বিসিবি কর্তারা। ফাহিম মনে করেন, তার মতো ক্রিকেটার হওয়া অসম্ভব নয়। তবে অত্যন্ত কঠিন।

তিনি বলেন, ‘(সাকিবকে) পার করতে চাইলে সাকিবের চেয়ে অনেক ভালো হতে হবে তাহলে। কারণ সাকিবের হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের চেয়ে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, ঘরোয়া অথবা আন্তর্জাতিকভাবে, সেটা তো আর কারও করার সুযোগ থাকছে না।

‘বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরেকটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া মানে আমরা যদি এক বা দুইজনের সেরা দুই-তিন দলের একটি হয়ে যেতে পারি, তাহলে সেটা সাকিবের মতো হবে। কিন্তু সেটা খুব কঠিন কাজ হবে। আপনার একজন শচীন টেন্ডুলকার কিংবা ভিভিয়ান রিচার্ডস দরকার যে বাংলাদেশ দলকে সেই জায়গায় নিয়ে যাবে। অসম্ভব না, কিন্তু আমার মতে এটি হবে খুবই দুরূহ।’

এ বিভাগের আরো খবর