আফিফ হোসেনের ব্যাটে নাজমুল একাদশ তুলেছিল ২৬৪। সেই রানই পাহাড়সম হয়ে দাঁড়ালো মাহমুদুল্লাহ একাদশের সামনে। পাহাড়ে চাপা পড়ে তাদের ভাগ্যে জুটল ১৩১ রানের হার।
টুর্নামেন্ট জুড়ে চলে আসা ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারা নাজমুল একাদশ ভাঙলেও, মাহমুদুল্লাহরা বজায় রাখলেন। দল গুটিয়ে গেলেন ৩২.১ ওভারে। এই জয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখলো নাজমুল একাদশ। বড় হারে মাহমুদুল্লাহর ফাইনালের আশা অনেকখানি মিইয়ে গেল।
শতক না পেলেও আফিফের ১০৮ বলে ৯৮ রানের ইনিংসটিই গড়ে দেয় নাজমুল একাদশের জয়ের ভিত। সঙ্গে মুশফিকুর রহিমের ৫২ এবং ইরফান শুক্কুরের ঝড়ো ৪৮ রানের কল্যাণে শুরুর ধ্বস সামলে টুর্নামেন্ট-সর্বোচ্চ ২৬৪ রান তোলে নাজমুল একাদশ।
জবাবে টুর্নামেন্টের ব্যাটিং ব্যর্থতা অব্যহত রাখে মাহমুদুল্লাহ একাদশ। চতুর্থ ওভারে ফিরে যান ইমরুল কায়েস, তার সঙ্গী লিটন দাস ফেরেন পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরের বলেই।
শুরু হয় যাওয়া-আসার মিছিল। দলীয় রান তিন অংক ছোঁয়ার আগেই একে একে ফিরে যান মুমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মাহমুদুল হাসান ও সাব্বির রহমান।
মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে নুরুল হাসান সোহান ২৪ রানের এক ছোট জুটি গড়লেও, মিরাজ আউট হবার পর ২০ বলের ভেতরই ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় মাহমুদুল্লাহ একাদশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৮ করেন নুরুল হাসান সোহান।
নাজমুলের দলের হয়ে তিনটি করে উইকেট শিকার করেন নাসুম আহমেদ ও আবু জায়েদ। দুটি করে উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। আল-আমিন হোসেন নেন এক উইকেট।
শতক-বঞ্চিত হলেও ম্যাচসেরা ও সেরা ব্যাটসম্যানের পুরষ্কার পান আফিফ। সেরা বোলারের পুরষ্কার পান রিশাদ ও সেরা ফিল্ডার নির্বাচিত হন নাজমুল।
দুপুরে টস জিতে ফিল্ডিং-এর সিদ্ধান্ত নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দুই দলই একাদশে আনে পরিবর্তন। মাহমুদুল্লাহ একাদশে নাইম শেখ ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের জায়গা নেন মাহমুদুল হাসান ও রকিবুল হাসান। নাজমুল একাদশে বাদ পড়েন সাইফ হাসান, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও নাঈম হাসান। সুযোগ পান পারভেজ হোসেন ইমন, আবু জায়েদ রাহি ও নাসুম আহমেদ।
আগের ম্যাচেই ৪৭ বলে ৯ রানের ইনিংস খেলবার পর শনিবার সৌম্য সরকার শুরু করেছিলেন রুবেল হোসেনকে টানা দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। পরের বলে আবারও আগ্রাসী শট খেলার চেষ্টা করে ইনসাইড এজে বোল্ড হন এই বাঁহাতি।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সঙ্গে ওপেনার ইমনও ফিরে যান পাওয়ার প্লে শেষ হবার আগে। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করেন আফিফ হোসেন ও মুশফিকুর রহিম।
প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিতে শুরু থেকেই কাউন্টার অ্যাটাক শুরু করেন আফিফ। অন্য প্রান্ত আগলে রাখেন মুশফিক। রানের চাকা সচল করে জুটি এগিয়ে যায় শতরানের দিকে। ৬৯ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আফিফ।
নাজমুল একাদশকে সহায়তা করেছেন মাহমুদুল্লাহর ফিল্ডাররাও। এক রানে মুশফিকের ক্যাচ ড্রপ হয় স্লিপে। আফিফ পঞ্চাশ ছোঁয়ার আগে তার ক্যাচ ফেলেন মমিনুল হক।
ফিফটিতে পৌছানোর পর রানের গতি বাড়ানো শুরু করেন আফিফ। দ্রুত পৌছে যান নব্বইয়ের ঘরে। সেঞ্চুরির একেবারে কাছে যেয়ে হয় অঘটন। ৩৯তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে মুশফিকের সিঙ্গেলের ডাকে সাড়া দিতে যেয়ে রান আউট হন আফিফ। ১৪৭ রানের জুটি ভাঙে ৩০ ওভারের পর।
বেশীক্ষণ টেকেননি মুশফিকও। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরির পর তিনি ৯০ বলে তুলে নেন ফিফটি। এবাদত হোসেনকে স্কুপ করতে গিয়ে ৫২ রানে ক্যাচ তুলে দেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের হাতে।
শেষদিকে জুটি গড়েন তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান শুক্কুর। ৩৬ বলে তাদের জুটি পৌছায় পঞ্চাশে। ৪৬ বলে ৭০ রানের জুটি ভাঙে তৌহিদ ২৭ রানে ফিরে যাবার পর। ততক্ষণে দল পেরিয়েছে ২৫০ রান।
ইরফান অপরাজিত থাকেন ৪৮ রানে। নাজমুল একাদশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৪/৮।