বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাঠজুড়ে ‘স্বাধীনতার নকশা’, আলোচনায় বেগুনি ধান

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২২ ০৮:২৪

ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেতের মধ্যে বেগুনি রঙের ধানগাছ দিয়ে তৈরি নকশা দেখে থমকে যাচ্ছেন পথচারীরা। অনেকেই ছবি তোলায় মেতে উঠছেন।

২০২১ সালে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলায় প্রথমবারের মতো জাতীয় পতাকার আদলে ধানের মাঠ গড়েছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি ওই উপজেলার ধানশাইল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

তবে এবার শুধু জাতীয় পতাকা নয়, ধানের মাঠে বাংলাদেশের মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধও গড়ে তুলেছেন ওই শিক্ষক। তার এমন কীর্তি জেলাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করায় তা দেখতে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ।

আলোচনা চলছে বেগুনি রঙের একটি ধানের গাছ নিয়েও; যে ধানের চারা দিয়েই এবার সুবিশাল নকশা তৈরি করেছেন নূরে আলম সিদ্দিকী। ঘন বেগুনি রঙের এই ধানের জাতটির নাম ‘পার্পল লিফ রাইস’। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষেই তার এমন উদ্যোগ।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর বেগুনি রঙের ধানের আবাদ প্রথম শুরু হয় গাইবান্ধায়। এই ধানগাছের পাতা ও কাণ্ডের রং বেগুনি। এর চালের রং-ও বেগুনি। তাই কৃষকদের কাছে এখন পর্যন্ত এই ধানের পরিচিতি বেগুনি ধান বা রঙিন ধান হিসেবে।

ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধানক্ষেতের মধ্যে বেগুনি রঙের ধানগাছ দিয়ে তৈরি নকশা, যা দেখে থমকে যাচ্ছেন পথচারীরা। অনেকেই ছবি তোলায় মেতে উঠছেন।

শেরপুর শহর থেকে আসা রাহাত বলেন, ‘আমি এ দৃশ্যটি আগে কখনও দেখিনি। প্রথমবার দেখে খুব ভালো লাগছে। তাই সেলফি তুলছি। আমরা শুনেছি, তিনি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর জন্য এ কাজ করেছেন। যিনি করেছেন তিনি সত্যিই সবার কাছে প্রশংসার দাবি রাখেন।’

শ্রীবরদীর রহমান বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাবার সময় মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকি। আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আর এই দৃশ্যটি এলাকার সুনামও বাড়িয়েছে।’

বন্ধুদের কাছ থেকে শুনে শেরপুর শহর থেকে ধান ক্ষেতের নকশা দেখতে এসেছিলেন হাসানুল বান্না সিফাত নামের এক শিক্ষার্থীও।

বেগুনি রঙের এই ধান চাষে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক কবির মিয়া। তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে এই ধান আমিও চাষ করব, ইনশাআল্লাহ।’

প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর ইউটিউবে পার্পল লিফ রাইস ধানের চাষ দেখার পর এই ধান চাষে আগ্রহ জাগে। পরে শালচূড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নানের মাধ্যমে স্থানীয় আদিবাসী এক কৃষকের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করি। গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেছিলাম। ধানও খুব ভালো পেয়েছি। তাই এবার দুই জমিতে পৃথকভাবে মোট ৫০ শতাংশ জমিতে ধানের আবাদ করে এর মধ্যে বেগুনি ধানের বীজও রোপণ করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে আমি আমার ধান ক্ষেতকে জাতীয় পতাকা ও বাংলাদেশের মানচিত্রের আকৃতিতে রূপান্তর করতে দুই জাতের ধান রোপণ করেছি। দেশের প্রতি ভালোবাসা ফুটিয়ে তুলতে এসব করছি। সামনের বছর আরও বড় আকারে করব।’

তিনি জানান, এবার অনেক কৃষকই বেগুনি ধান চাষে আগ্রহ দেখিয়ে তার কাছে বীজ চেয়েছেন।

বেগুনি ধান সম্পর্কে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ঝিনাইগাতী উপজেলায় এ ধানের চাষ গত বছর প্রথম হয়েছিল। এই ধানের পুষ্টিমান বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু। ধানের এই জাতটি আবাদে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মুহিত কুমার দে জানান, শেরপুর জেলার কিছু এলাকায় আগে থেকেই এই বেগুনি ধান চাষ হচ্ছে। তবে এবার গতবারের তুলনায় একটু বেশি চাষ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই ধান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধানের আবাদ বৃদ্ধির চিন্তা করা হচ্ছে। যারা বেগুনি ধানের আবাদ করেছেন আমরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। প্রাকৃতিক কোনো সমস্যা না হলে এবার শেরপুরে এ ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করি।’

এ বিভাগের আরো খবর