নারায়ণগঞ্জে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মো. হাতেম। লঞ্চে ওঠার পর স্ত্রীর সঙ্গে শেষ কথা হয়। শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির পর থেকে হাতেম নিখোঁজ। স্ত্রী, মেয়ে বারবার ফোন দিয়ে গেলেও কেউ আর সাড়া দিচ্ছেন না।
৫৫ বছর বয়সী হাতেমকে জীবিত অবস্থায় পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছে পরিবার। শেষ আশা ছিল, লঞ্চ উদ্ধারের পর হয়তো তাতে মিলবে মরদেহ। তবে লঞ্চে কোনো মরদেহই পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
হাতেমের স্ত্রী ফাতেমা নিউজবাংলাকে জানান, মুন্সীগঞ্জের জুগিনি ঘাট এলাকায় তাদের বাড়ি। তার স্বামী হৃদরোগী; ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। ডাক্তার দেখাতে একাই নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিলেন। ফেরার জন্য এম এল আশরাফ উদ্দিন লঞ্চে ওঠেন।
ফাতেমা বলেন, ‘লঞ্চ ডোবার পর থেকে আমার স্বামীর ফোন বন্ধ পাইতাছি। লঞ্চ পাওয়া গেল কিন্তু আমার স্বামীরে পাওয়া গেল না। সরকারকে অন্তত লাশটা খুঁজে বের কইরা দিতে বলেন।’
মেয়ে কাকলি বেগম বলেন, ‘আমি শ্বশুরবাড়ি ছিলাম। মায়ের কাছে শুনছিলাম বাবা নারায়ণগঞ্জ গেছে ডাক্তার দেখাইতে। পরে শুনি লঞ্চ ডুবছে। মারে ফোন দিয়ে কই, বাবারে ফোন দাও। আমরা সবাই মিলে ফোন দিতাছি কিন্তু বাবার ফোন আর বাজে না।
‘রাত ১২টায় লঞ্চ উঠাইছে। ভাবছিলাম তাতে থাকব কিন্তু ভেতরে বাবারে পাইলাম না। বাবার লাশটা খুঁইজা দেন।’
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলামিন নগর এলাকায় রোববার বেলা ২টার দিকে সিটি গ্রুপের কার্গো জাহাজের ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন লঞ্চটি ডুবে যায়। রাতভর চেষ্টায় সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে লঞ্চটি শীতলক্ষ্যার পাড়ে আনা হয়। এখন পর্যন্ত লঞ্চের আট যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।