বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংসারের চাকা ঘোরায় ইব্রাহিমের বাঁশি

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২২ ১২:৫৬

ইব্রাহিম বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকায় মানুষ রাস্তার পাশে বসে তাদের প্রতিভা দেখিয়ে টাকা আয় করছে। আমার যে প্রতিভা আছে সেটা কাজে লাগিয়ে আয়ের পথ বেছে নিয়েছি।’

৩৫ বছর বয়সী ইব্রাহিমের নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। জীবিকার তাগিদে একসময় রিকশাও চালিয়েছেন। অসুস্থ মা-বাবা আর স্ত্রী সন্তান নিয়ে জীবন যখন ওষ্ঠাগত, তখনই বাঁশিতে জীবনের সুর খুঁজে পান তিনি।

১৬ বছর বয়সেই বাঁশিতে হাতেখড়ি হয়েছিল ইব্রাহিমের। যাত্রাদলে বাঁশি বাজাতেন তার বাবা। সেই সুরে মজে যায় তার প্রাণও। শখের বসে মাঝেমধ্যে নানা সুর তুলতেন বাঁশিতে। সেই সুর এখন তার নেশা ও পেশা। চট্টগ্রাম শহরে ঘুরে ঘুরে বাঁশি বাজিয়েই ইব্রাহিম এখন জীবনের খোরাকি জোগান।

গত সোমবার বিকেলে আগ্রাবাদ জাম্বুরী উদ্যানে বাঁশি বাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইব্রাহিম। সঙ্গে পাঁচ ধরনের বাঁশি আর বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা চারটি প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা ‘পেটের দায়ে বাঁশি শুনাই। সবাইকে সালাম ও আদাব জানাই। আপনারা সবাই সাহায্যের হাত প্রসারিত করুন, বাঁশিওয়ালা ভাইকে।’

উদ্যানের এক কোণে দেখা হয় তার সঙ্গে। নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় ইব্রাহিম জানান, কীভাবে বাঁশি বাজিয়ে ঘুরে তার সংসারের চাকা।

সপ্তাহের সাত দিনই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বাঁশি বাজান ইব্রাহিম। বিকেলের আগেই নির্দিষ্ট স্থানে হাজির হতে হাটহাজারী থেকে ছুটে আসেন।

ইব্রাহিম বলেন, ‘২০২০ সালে করোনার লকডাউনের ৫ মাস আগে থেকে পুরোদমে বাঁশি বাজানো শুরু করি। এর আগে আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রিকশা চালিয়েই সংসার চালাতাম। কিন্তু হঠাৎ করে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার খরচ জোগাতে তাই রিকশা বিক্রি করে দেই।

‘বাবাও অসুস্থ দীর্ঘদিন ধরে। একদিকে মায়ের চিকিৎসা, অন্যদিকে স্ত্রী-সন্তানসহ সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। কারো কাছে সাহায্যের জন্য হাত না পেতে, শখের বাঁশিতেই সুর তুলে রোজগারের চিন্তা করি। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বাঁশির সুরেই জীবন চলে আমার পরিবারের।’

ইব্রাহিম জানান, বাঁশি বাজিয়ে যা পান তা দিয়েই তার সংসার চলে যায়। ২০১৯ সালে কক্সবাজারে ৩০ হাজার টাকা বেতনের একটি চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্য সেই চাকরিও অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ছেড়ে দেন।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে বাঁশি বাজানো অনেক বেশি সম্মানের। ভিক্ষা করে কারো কাছে টাকা তো খুঁজছি না। বাঁশি শুনে মানুষের ভালো লাগলে যা দেয় তাতেই আমি খুশি। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকায় মানুষ রাস্তার পাশে বসে তাদের প্রতিভা দেখিয়ে টাকা আয় করছে। আমার যে প্রতিভা আছে সেটা কাজে লাগিয়ে আয়ের পথ বেছে নিয়েছি।’

হাটহাজারীর জোবরা গ্রামের সন্তান মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, পার্ট টাইম কোথাও বাঁশি বাজানোর সুযোগ পেলে হয়তো ঘুচবে আরও কিছুটা কষ্ট।

এ বিভাগের আরো খবর