২০১১ সালে জার্মানিতে পাড়ি জমান বরিশালের রাকিব হোসেন শুভ। সেখানেই পরিচয় হয় জার্মান নার্স আলিসা থেওডোরা পিত্তার সঙ্গে।
একপর্যায়ে আলিসার প্রেমে পড়েন শুভ। আলিসাকে সে কথা জানালে তিনিও সম্মতি দেন। এরপর পরিবারের অনুমতি নিয়ে গত বছরের ৫ মার্চ জার্মানিতেই তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ে করলেও বিদেশের মাটিতে হয়নি জাঁকজমকপূর্ণ কোনো আয়োজন। তাই বউ নিয়ে দেশে ফিরেছেন বরিশালের সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের শুভ। সঙ্গে এসেছে আলিসার বান্ধবী থেইসাও।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার বিকেলে তারা প্লেন থেকে নামেন। এরপর হেলিকপ্টারে শনিবার সকালে তারা বরিশাল আসেন। এ খবরে তাদের দেখতে ভিড় জমান স্বজন ও স্থানীয়রা।
ঢাকা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে বরিশাল আসেন শুভ। ছবি: নিউজবাংলাশুভ নিউজবাংলাকে জানান, রেলওয়ে ডিপ্লোমা পাস করে ২০১১ সালে তিনি জার্মানিতে যান। সেখানে সিটি রেলওয়ে সার্ভিসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ শুরু করেন। থাকতেন বেইলি ফিল্ড ডায়ালন্ড্রোভ এলাকায়। ওই এলাকায়ই বাবা-মার সঙ্গে থাকেন আলিসা।
শুভ বলেন, ‘একই এলাকায় থাকায় আলিসার সঙ্গে প্রায়ই দেখা এবং কথা হতো। একসময় তাকে ভালো লাগে। যখন বুঝলাম আলিসাও আমাকে চায় তখন তাকে ভালোবাসার কথাটা জানালাম।
‘এরপর তার সঙ্গে কথা বলে আমার পরিবারকে বিষয়টি জানাই। তাদের সম্মতি পেয়ে আলিসার পরিবারকেও জানানো হয়। তারা আপত্তি না জানালে আলিসাকে মুসলমান হতে বলি। এরপর ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে করি।’
আলিসার সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছেন তার বান্ধবী থেইসাও। ছবি: নিউজবাংলাদেশে বিয়ের আয়োজনের কথা জানিয়ে শুভ বলেন, ‘জার্মানিতে বিয়ের সময় আমাদের সমাজের বিয়ের যে রীতিনীতি ও উৎসব তা পালন করতে পারিনি। আমাদের দেশের বিয়েতে যতটা উৎসব হয় তার কিছুই সেখানে হয়নি। আমি চাই নতুনভাবে বিয়ের উৎসব করতে। আলিসাও আমাদের দেশে যেভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান হয় তা দেখে মুগ্ধ। সেও চাচ্ছে এ দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী বিয়ের উৎসব হোক।
‘আমার আর আলিসার আবদারে বাবা-মা ও স্বজনরা নতুনভাবে বিয়ের উৎসবের আয়োজন করেছেন। আগামী ৯ মার্চ আমাদের গায়েহলুদ এবং ১০ মার্চ গ্রামবাসীর জন্য বউভাতের আয়োজন করা হয়েছে।’
শুভর বাবা চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছেলে বিদেশে বিয়ে করেছে, সেখানেই থেকেছে এত দিন। অনেক দিন পর বউ নিয়ে দেশে ফিরেছে। গ্রামবাসী ও আত্মীয়স্বজনকে ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিতে পারিনি। এ জন্য গায়েহলুদ ও বউভাতের আয়োজন করেছি। তাদের বিয়েতে আমি অনেক খুশি।’