বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিকার লাইনে দীর্ঘ অপেক্ষা

  •    
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১২:২৪

জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘অনেকেই ভোরে আসছে। কিন্তু সকাল ৯টা বাজে, এখনও ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করে নাই। মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আরও আগে থেকে টিকা দেয়া উচিত ছিল।’

সাভারে একসঙ্গে পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়নের ২৬টি কেন্দ্রে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শনিবার করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার শেষ দিন- এমন খবরে প্রতিটি টিকাকেন্দ্রে মানুষের ঢল নেমেছে।

শনিবার ভোর থেকেই সাভার পৌর এলাকায় বাংলাদেশ হেলথ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে টিকা নিতে কেন্দ্রে আসতে থাকে মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। হাজার হাজার মানুষকে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এতে একপর্যায়ে তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খলা।

পৌরসভা ও ইউনিয়নের ওয়ার্ডসহ প্রতিটি টিকাকেন্দ্রে মানুষের এমন উপচেপড়া ভিড়ের কথা জানিয়েছে প্রশাসনসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

সকাল ৯টা থেকে টিকা দেয়া শুরুর কথা থাকলেও মানুষের ভোগান্তি কমাতে আরও আগে টিকা শুরুর দাবি জানিয়েছেন টিকাপ্রত্যাশীরা।

সাভারের বাংলাদেশ হেলথ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে ভোর ৫টা থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েছেন পোশাকশ্রমিক ঈসমাইল হোসেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও টিকা দিতে পারেননি তিনি।

নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম ডোজ টিকা দিতে ভোর ৫টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের গাদাগাদিতে লাইন ভেঙে গেছে। যে যার মতো ধাক্কাধাক্কি করে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কথাও কেউ মানছে না। এই অবস্থায় কখন টিকা দিতে পারব জানি না।’

হায়দার আলী নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) অনেকে সুষ্ঠুভাবে টিকা দিতে পারলেও আজ আবার বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। মানুষের ভিড় যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভিড় ঠেলে কিভাবে টিকা নেব বুঝতে পারছি না।’

আশুলিয়ার ডেন্ডাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও ভোর থেকে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। ভিড় বাড়তে বাড়তে লাইন একপর্যায়ে স্কুলমাঠ ছাড়িয়ে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কসহ ফুটপাতে চলে আসে।

সকাল ৬টা থেকে এ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন স্থানীয় একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক আনোয়ারা বেগম। সকাল ৯টা নাগাদ তার অবস্থান মহাসড়কের ফুটপাতের দীর্ঘ সারিতে। তখন তিনি জানতে পারেন তাকে টিকা দিতে হবে সাভার উপজেলায় গিয়ে।

এতে হতাশা ও ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোর ৬টা বাজে টিকা নিতে দাঁড়াইছি। এখন আবার ওনারা বলতাছে সাভার যান। এটি কি ঠিক হলো? অফিস অ্যাফসেন (অনুপস্থিত) কইরা আইজকা আসছিলাম। এখন একদিনের এক হাজার ট্যাকা মাইর (কাটা)। তাহলে ক্যামনে আমরা চলমু? আমরাতো গরীব মানুষ।’

পোশাকশ্রমিক নূরজাহান বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অফিস থাইকা ছুটি নিয়া সকাল ৮টা বাজে আইসা দাঁড়াইছি। টিকা নিয়া আবার অফিসে যাওয়ার কথা। কিন্তু অনেক বড় লাইন। কখন টিকা নেয়া শুরু করব কইতে পারি না। দেরি হলে গার্মেন্টেও ঢুকতে দিব না। হাজিরার ট্যাকা কাইটা নিব।’

জাহাঙ্গীর হোসেন নামে আরেকজন বলেন, ‘অনেকেই ভোরে আসছে। কিন্তু সকাল ৯টা বাজে, এখনও ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করে নাই। মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আরও আগে থেকে টিকা দেয়া উচিত ছিল।’

এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তি কমাতে আরও সকাল থেকে টিকাদান শুরুর দাবি জানিয়েছেন তারা।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে পৌর এলাকার সবগুলো টিকাকেন্দ্রে মানুষের অনেক ভিড়। আমাদের পুলিশও পর্যাপ্ত আছে। ইউএনও সাহেবকে আনসার সদস্য দেয়ার জন্যও বলেছি। মানুষ যখন সেবা পায় তখন তার প্রত্যাশাও বেড়ে যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ‘আজকে অবস্থা খুব খারাপ। হাজার হাজার মানুষ টিকা নিতে ভিড় করছে। আমি নিজে মাইকিং করছি মানুষ যাতে সুষ্ঠুভাবে টিকা নেয়।’

এদিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার শেষ দিন বলা হলেও গণটিকাদান কর্মসূচি আরও দুই দিন চলবে।

এ বিভাগের আরো খবর