মেহেরপুরে কোনোভাবেই থামছে না গমের হুইট ব্লাস্ট রোগ। এ রোগে কাঁচা সবুজ গম সাদা হয়ে যাচ্ছে। এতে ফসল ঘরে তোলার আগেই নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষিরা।
কৃষকের ঘরে থাকা পুরোনো জাতের বীজ বপন করায় গমের এ রোগ দেখা দিয়েছে, এমনটিই বলছে কৃষি বিভাগ।
চাষিরা বলছেন, আবাদ করা পাকা গম সংগ্রহের জন্য এখনও অপেক্ষা করতে হবে মাসখানেক। অথচ এর আগেই ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কাঁচা সবুজ গম সাদা রঙ ধারণ করেছে। গমের শিষ শুকিয়ে যাওয়ায় ভেতরে কোনো দানা নেই। প্রথমে কিছু গাছের শিষ শুকিয়ে যেতে থাকলেও কয়েকদিনের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্ষেতে। কয়েক দফা কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক দিয়েও কোনো সুফল পাননি তারা।
ব্লাস্ট রোগে মাঠের গম সাদা হয়ে যাচ্ছে। ছবি: নিউজবাংলাএ দিকে কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে কৃষকদের বারি ৩৩ ও ৩২ জাতের ব্লাস্ট রোগপ্রতিরোধী গম আবাদের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু কৃষক তা না মেনে নিজের ঘরে থাকা পুরোনো জাতের গমের বীজ বপন করায় এ রোগ দেখা দিয়েছে।
নিউজবাংলাকে গম চাষি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এখান থেকে অন্যান্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে।’
আরেক গম চাষি চান্দ আলী বলেন, ‘এই রোগে ফসল আর হয় না। মাঠের গম সাদা হয়ে যাচ্ছে। চাষি কেমন করে বাচঁবে? বিষ দিয়েও কোনো কাজ হইছে না।’
ছত্রাকনাশক দিয়েও কমছে না এ রোগ। ছবি: নিউজবাংলাচাষি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বছর জুড়ে খাওয়ার জন্য দুই বিঘি জমিতে প্রদিপ জাতের গম বুনি। এখন গমের দানা বাঁধার সময় হঠাৎ গম সাদা হই গেল। আমি ছয়বার জমিতে বিষ দিছি, তাতেও কোনো কাজ হইছে না।’
গমের অবস্থা খুব খারাপ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘গম এখনো একমাস জমিতে থাকবে, তারপর কাটা যাবে। গমে রোগ লাইগে সব দানা নষ্ট হয়ে গেছে।’
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেলায় এ মৌসুমে প্রায় ১২হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে গম চাষিদের পরামর্শ দিয়েছি বারি গম ৩৩, ৩২ লাগানোর জন্য। কারণ এই জাতের গম গুলি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধক। কৃষকরাও সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়েছে।
‘তবে কিছু কৃষক পুরোনো জাতের বীজ ব্যবহার করেছে। তাদের জমিতে ছত্রাকনাশক দিতে বলা হচ্ছে।’