বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফরিদপুরে পানিবন্দি ২ হাজার পরিবার

  •    
  • ২৪ আগস্ট, ২০২১ ১৬:০৫

সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরে যাওয়ার তিনটি রাস্তা তলিয়ে গেছে। কয়েক হাজার একর আউশের ক্ষেত এখন পানির নিচে।

এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ফরিদপুর জেলার চারটি উপজেলার নিচু অঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন।

জেলা সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার বহু গ্রামে ফসলি জমি, রাস্তা, নিচু এলাকার বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, পদ্মায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরে যাওয়ার তিনটি রাস্তা তলিয়ে গেছে। কয়েক হাজার একর আউশের ক্ষেত এখন পানির নিচে।

তিনি আরও জানান, পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

এরই মধ্যে ইউনিয়নের ডাঙ্গী গ্রামের শুকুর আলী মৃধার ১৬ একর ও আলিমুদ্দিন মাতুব্বরের ৩ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আলিমুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে ভাঙনের কবলে পড়ে একটি কলাবাগানের অন্তত দেড় হাজার কলাগাছ ভেসে গেছে।

ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের মধ্যে ১ হাজার ১৫০ পরিবার, ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের ১ হাজার ২০০ পরিবার ও চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের মধ্যে ৩ হাজার পরিবারসহ ৪১টি গ্রামের ৫ হাজার ৩৫০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে।

সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, ‘নাজিম বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামে যাওয়ার ইট বিছানো সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার অংশ ও ব্যাপারী ডাঙ্গীগামী সড়কের মোতালেব মিন্টুর বাড়ির সামনে ৫০ মিটার অংশ পানির তোড়ে ভেসে গেছে।’

চর মাধবদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা সাইফুল ইসলাম আজম জানান, তার ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে আছে অন্তত তিন হাজার পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।

এদিকে চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন জানান, উপজেলার গাজিরটেক, হরিরামপুর, চরঝাউকান্দা ও চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের একাংশ প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নগুলোতে প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও জানান, উপজেলার ইউনিয়নগুলো চরাঞ্চলবেষ্টিত নিচু অঞ্চল, তাই একটু পানি বৃদ্ধি পেলেই এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে যায়। ওই সব এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গবাদিপশুর খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে সদরপুর উপজেলার দিয়ারা নারকেলবাড়িয়া, চরনাছিরপুর, ঢেউখালী ও চরমানাইর ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামের ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান জানান, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি। এ ছাড়া ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। শিগগির ত্রাণসহায়তা প্রদান করা হবে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলার নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষের খবর রাখছি। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাদের সরকারিভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

এ ছাড়া বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে খাদ্যসহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। জেলার সব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ সরকারি খাদ্যসহায়তার আওতায় আসবে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর