চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি দুই দিনে বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীতীরে ভাঙনের শঙ্কাও বেড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, গত ১২ ঘণ্টার পদ্মায় পানি কমেছে ১৫ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় কমেছে ১০ সেন্টিমিটার। এখন পানি কমলে নদীভাঙন অনেকটাই স্বাভাবিক।
পদ্মা ও মহানন্দায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে সাধারণ মানুষ পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পানিতে ডুবে গেছে ২ হাজার ৮৫৯ হেক্টর ফসলি জমি।
সদর উপজেলার নারায়ণপুরের বাসিন্দা আব্দুল মোমিন সাদ্দাম বলেন, ‘পানি মরছে, তবে খুবই কম। এখনও সব এলাকায় ভাসার (বন্যা) হয়্যা আছে।’
শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বাসিন্দা রাসেল রহমান বলেন, ‘গত কয়েক দিন থেকে পানি কমছে। আবার যে বাড়বে না তার কোনো গ্যারেন্টি নাই।
‘পানির মধ্যে পাড় থাইকা যখন খানিক নিচে (এক-দেড় হাত) নামবে, তখন ফের ভাঙন দেখা দিবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পনি উন্নয়ন বোর্ডর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন জানান, গত ১২ ঘণ্টার পদ্মায় পানি কমেছে ১৫ সেন্টিমিটার। মহানন্দাতেও পানি কমেছে ১০ সেন্টিমিটার। বর্তমানে পানি পদ্মায় বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ও মহানন্দায় বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের আশঙ্কা আছে। আমাদের পর্যবেক্ষণে আছে। এর আগে গোয়ালডুবিসহ যে কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল এখন সেখানে আর ভাঙছে না। আমরা বালির বস্তা ফেলছি।’
প্রকৌশলী ময়েজ আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমাদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন টিম এসেছিল। তারা নদীর গতিপ্রকৃতি ও ভাঙনের বিষয়গুলো দেখে গেছে।
‘তারা নদীতীর সংরক্ষণের জন্য কী করা উচিত সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিলে সে আলোকেই আগামীতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় ২ হাজার ৮৫৯ হেক্টর কৃষিজমি পানিতে ডুবে যায়। এর মধ্যে ২ হাজার ৬১৩ হেক্টরই আউশের ক্ষেত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটা তালিকা করা হয়েছে। পরে সরকারি বিভিন্ন সহায়তার ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।