মানিকগঞ্জে বিধবা ও দুস্থ নারীদের আত্মকর্মসংস্থানে সেলাই মেশিন বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জেলা পরিষদের হল রুমে সোমবার দুপুরে কয়েকজন বিধবা ও দুস্থ নারীর হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন। এর পরপরই অভিযোগ ওঠে, চেয়ারম্যানের স্বজনপ্রীতির কারণে অধিকাংশ স্বচ্ছল ব্যক্তি সেলাই মেশিন পেয়েছেন।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের বরাদ্দ অনুযায়ী মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ৮৯ জন বিধবা ও দুস্থ নারীর তালিকা তৈরি করে।
দুপুরে কয়েকজনকে দেয়ার পর জেলা পরিষদের লোকজনকে সেলাই মেশিন দিয়ে দিতে বলেন চেয়ারম্যান। হল রুম থেকে লোকজন কমে গেলে তালিকা অনুযায়ী সেলাই মেশিন দেয়া শুরু হয়।
কর্তৃপক্ষের কাছ তালিকা চেয়েও পাওয়া যায় নি।
হরিরামপুরের ইজদিয়া গ্রামের মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাগো বাড়ির ওইখানে চেয়ারম্যানের স্কুল। আমাদের সাথে চেয়ারম্যান অন্যরকম সম্পর্ক। আমার ছেলে চেয়ারম্যানের স্কুলে লেখাপড়া করে। তাই আমার নিজের কাজ কইর্যা খাওয়ার জন্য সেলাই মেশিন দিছে।’
স্বামী ব্যবসা করেন বলেও জানান মনোয়ারা।
একই এলাকার পারভীন আক্তার বলেন, ‘জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন আমাগো নিজেগো লোক। আমার চাচা লাগে, সেলাই মেশিন দিছে।’
হরিরামপুরের বাল্লা ইউনিয়নের সাবেক মহিলা মেম্বার রেহানা বেগমও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তিনি কিভাবে পেরেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আপনারা তো সাংবাদিক। আপনাগো সাথে কথা বলতে ভয় লাগে। কি কমু আর কি না কমু তাই লেখালেখি করবেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, জেলা পরিষদের সেলাই মেশিন যাদের দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে গরীব ও বিধবার সংখ্যা কম। স্বচ্ছল মানুষের সংখ্যাই বেশি। চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্যদের কাছের লোকজনকেই মেশিনগুলো দেয়া হয়েছে।
আরেকজন জানান, শুধু স্বজনপ্রীতির কারণে প্রকৃত বিধবা ও দুস্থ অনেক নারীকে বাদ দেয়া হয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে সেলাই মেশিন নিজেদের কাছের লোকজনকে দিয়েছেন চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ‘জেলা পরিষদের সদস্যরা যে তালিকা দিয়েছেন, সে অনুযায়ী সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। তালিকায় যাদের নাম এসেছে এবং যারা পেয়েছেন তাদের সর্ম্পকে ভালো করে খোঁজ নেয়া সম্ভব হয় নি। যার ফলে কিছুটা এদিকি সেদিক হতে পারে।’