পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় রোববার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
দুপুরে পটুয়াখালীর সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক রোখসানা পারভীন জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একই মামলায় চেয়ারম্যানের সহযোগী বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব মজিবুর রহমান, বাউফল উপজেলার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান, আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন তালুকদার এবং ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন ও আশ্রাফুল আলম কামালকে কারাগারে পাঠায় আদালত।দুদকের আইনজীবী আরিফুল হক টিটো জানান, ২০১৬ সালে হতদরিদ্রদের (ভিজিডি) তালিকা প্রণয়নে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তালিকায় একই পরিবারের ৪৮ জন, ৯১ জন দ্বৈত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত এবং ৯৪ জন বিত্তশালীসহ মোট ২৩৩ জনকে অন্তর্ভুক্ত করেন অভিযুক্তরা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দুদকের নজরে আসে। তালিকা প্রণয়নে অসংগতি পেয়ে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি বাউফল থানায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন পটুয়াখালীর দুর্নীতি দমন কমিশনের তখনকার উপসহকারী পরিচালক মানিক লাল দাস।
দুদক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে নেয়। পরে তারা জামিন নেন। ২০১৮ সালের ৩ মে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা খরচ বাবদ বাদ দিয়ে ৬ হাজার ৬৬৯ কেজি চালের মূল্য বাবদ ১৮ লাখ ৯ হাজার ৪০৮ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেন অভিযুক্তরা।
পরে দুদকের মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা মানিক লাল দাস। এতে আদালত সন্তুষ্ট না হয়ে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয় দুদককে।
২৮ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী দুদকের উপসহাকারী পরিচালক আরিফ হোসেন শাহীন হাওলাদারসহ ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা চার্জশিট দেন।
রোববার আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন।
শাহীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এক কিশোরীকে জোরপূর্বক বিয়ে করে এক দিনের মাথায় তালাকের ঘটনায় আদালতে মামলা রয়েছে। কিশোরীকে বিয়ের ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সামায়িক বরখাস্ত করলে উচ্চ আদালতের আদেশে তিনি কিছুদিন বহাল থাকেন।
রোববার হাইকোর্ট ওই স্থগিত আদেশই বহাল রাখেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
বাউফলে সালিশে গিয়ে নিজেই এক কিশোরীকে বিয়ে করে বসেন চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার। এ ঘটনায় গত ২৯ জুন তাকে কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।