বগুড়া সদরে সালিশে মারধরের দুই দিন পর এক যুবককের মৃত্যু হয়েছে। এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তাকে মারধর করা হয়।
পুলিশ জানায়, রোববার সকালে আবদুল মমিন নামের ওই যুবক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্বজনরা তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসা চলাকালে দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
বিকেলে মমিনের মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আবদুল মমিনের বাড়ি বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি মধ্যপাড়া এলাকায়।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম জানান, শুক্রবার দুপুরে মমিনের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ি মধ্যপাড়া এলাকার এক নয় বছরের শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটু। রাতেই কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত অফিসে সালিশ বসে। সেখানে মমিনকে মারধর করা হয়। পরে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
ওই শিশুর মা বলেন, ‘শুক্রবার সকালে আমার মেয়েকে নিজ ঘরে ডেকে নেয় মমিন। এর কিছুক্ষণ পরই আমার মেয়ে চিৎকার করে বের হয়ে আসে। মমিন তার (শিশু) সঙ্গে কী করেছিল, এটা আমি জানি না।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিটুকে বিচার দিই। পরে রাতে সালিশ ডাকা হয়। ওই সালিশে মমিনকে মারধর করা হয়েছে, তবে খুব একটা বেশি না।’
স্থানীয়রা জানান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজে মমিনকে কাঠের বাটাম দিয়ে মারধর করেন। এরপরই মমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু তার স্বজনরা তাকে হাসপাতালে নেননি।
রোববার সকালে মমিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পরে মমিনের মরদেহ বাড়িতে আনে তার স্বজনরা।
এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটু বলেন, ‘মমিন একটা অনৈতিক কাজ করেছিল। এ অভিযোগে আমার অফিসের মধ্যেই তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন তারই (মমিন) বাবা। আমি তাকে মারধর করিনি।’
তিনি বলেন, ‘মমিন ও তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ চলছিল। এ দ্বন্দ্বে বিষাক্ত কিছু সেবন করে মমিন আত্মহত্যা করতে পারেন।’
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্সিলর বিটুকে থানায় ডেকেছি। তাকে আটক করা হয়েছে, বিষয়টি এমন নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মমিনের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তারা অভিযোগ করবে না বলেও আমাদের জানানো হয়েছে। এরপরেও আমরা ময়নাতদন্ত করতে মরদেহ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’