বরিশালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের তিন ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগের পৌর মেয়ররা।
বরিশাল ক্লাবে শনিবার বিকেলে বিভাগের ২৬ পৌরসভার মেয়ররা এক সংবাদ সম্মেলনে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশসহ চার দফা দাবি জানান।
বাকি দাবিগুলো হলো বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে করা দুটি মামলা প্রত্যাহার, সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমানের অপসারণ এবং বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হারিছুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে হারিছুর বলেন, ‘গত বুধবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলা কমপ্লেক্সে ইউএনও মুনিবুরের নির্দেশে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে বাধা দেয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বরিশাল সিটি মেয়র ইউএনওকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
‘ইউএনওর সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশে মেয়র সেরনিয়াবাত উপজেলা কমপ্লেক্সের ফটক অতিক্রমের সময় ইউএনওর নির্দেশে তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা মেয়রকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীরা মেয়রকে ঘিরে ফেলেন। পরে তাকে তার বাসভবনে পাঠিয়ে দেয়া হয়।’
গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হারিছুর বলেন, ‘মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে গুলি করার খবর মুহূর্তে নগরব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার জনতা ও দলীয় নেতা-কর্মী পুনরায় উপজেলা কমপ্লেক্সের গেটে যাওয়ায় তাদের লক্ষ্য করে অবিরাম গুলিবর্ষণ করা হয়। গুলিবিদ্ধ হয় অনেকে।
‘আহত হন বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ ৬০-৭০ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আহতরা চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রওনা হওয়ার সময় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রায় ২০০ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে। তখন আরও ৫০ জনের মতো নেতা-কর্মী জখম হন।’
হারিছুর বলেন, ‘আমরা বিস্মিত হয়ে যাই যে, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাচারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১৯ আগস্ট কোতোয়ালি মডেল থানায় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে ১ নম্বর আসামি করে দুটি মামলা করেন। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। শোকাবহ আগস্টের ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদা রক্ষায় আমরা এ নিন্দনীয় ঘটনার কোনো প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে পারছি না। কিন্তু এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তাদের দাবি মানা না হলে আগস্ট মাস শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও জানান গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হারিছুর।