স্ত্রীর করা যৌতুক ও ভরণপোষণ মামলার দায় এড়াতে ওয়াসিম জাহান তৌহিদ আত্মগোপনে গিয়ে ভাইকে দিয়ে অপহরণের পর হত্যা মামলা করিয়েছিলেন।
মামলার এক বছর ৮ মাস পর বৃহস্পতিবার তাকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শনিবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক।
তিনি জানান, ২০১৭ সালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ডোমেরহাট গ্রামের তৌহিদের সঙ্গে পাশের সুবর্ণদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক হয়। মেয়েটি এক পর্যায় তৌহিদকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি অস্বীকার করেন।
২০১৮ সালের ২৭ মে সালিশে স্থানীয় লোকজন তৌহিদের সঙ্গে জান্নাতির বিয়ে দেয়। তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর তৌহিদ দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন জান্নাতিকে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তৌহিদ সন্তানসহ স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে বন্ধ করে দেন তাদের ভরণপোষণও।
পিবিআইর পরিদর্শক রাজ্জাক জানান, ২০১৯ সালে সন্তানের ভরণপোষণ দাবি করে জান্নাতি সুন্দরগঞ্জ পারিবারিক জজ আদালতে তৌহিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার দায় এড়াতে তৌহিদ আত্মগোপনে যান। একই বছরের ৮ ডিসেম্বর তার বড় ভাই মানজুমুল হুদা নাহিদকে দিয়ে স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আমলী আদালতে (সুন্দরগঞ্জ) অপহরণ ও হত্যা মামলা করেন।
তিনি জানান, গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আদালত তৌহিদকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বাদীর বাড়িতে গিয়ে আঁচ করতে পারেন, পরিবারে কোন শোক-আহাজারি নেই। এর সূত্র ধরে মামলার রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয় পিবিআই।
তদন্ত কর্মকর্তা রাজ্জাক বলেন, 'স্ত্রীর করা ভরণপোষণ মামলার দায় এড়াতেই গাজীপুরে আত্মগোপন করেন তৌহিদ। সেখানে গার্মেন্টসে চাকরি নেন। সব ঘটনা গোপন রেখে লালমনিরহাটের এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়েও করেন তিনি।'
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মগোপনে যাওয়া তৌহিদকে গাজীপুর থেকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।