এখনো বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। এতে নীলফামারীর নিম্নাঞ্চলের ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টার পর থেকে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মধ্যরাত থেকে কমতে থাকে পানির প্রবাহ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারতের সিকিমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তায় পানি বেড়েছে।
তৃতীয় দফায় পানি বাড়ায় তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। পানি বাড়ায় ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, নাউতারা, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী, গোলমুন্ডা ও কৈমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ি, কেল্লাবাড়ির চরের প্রায় ৬০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের বাড়িতে চুলা ডুবে যাওয়ায় তারা ঠিকমতো রান্না করতে পারছে না। এতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করতে হচ্ছে তাদের।
খালিশা চাপানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, ‘বাইশপুকুর ও ছোটখাতা চরের ৩০০-এর বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকেই তিস্তা ব্যারেজের কলম্বিয়া বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, ভারতের সিকিমে বৃষ্টিপাতের কারণে উজানে তিস্তায় পানি বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিস্তা এলাকা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় বলেন, পানিবন্দি ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের মানুষের জন্য ছয় টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এই চাল বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া বিতরণ করা হবে শুকনা খাবার।
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, তিস্তা এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা যেন সহায়তা পান সে জন্য জনপ্রতিনিধিদের সার্বক্ষণিক বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।