ইউএনওর নির্দেশে ৬০ জনের বেশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও নগর ভবনের কর্মীদের গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা।
তারা বলেন, ‘অতি উৎসাহী আনসার মুহুর্মুহু গুলি ছোড়ে। যদিও সেখানে গুলি ছোড়ার মত কোনো পরিস্থিতিই ছিলনা।’
পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বুধবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন করেছে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।
নগরীর কালিবাড়ি রোডে মেয়রের বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলন হলেও মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ অনুপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগে সহসভাপতি গাজী নইমুল হোসেন লিটু বলেন ‘নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবেই উপজেলা চত্ত্বরে ব্যানার অপসরণ করেছিলেন নগর ভবনের কর্মীরা।
‘ইউএনও মুনিবুর রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মেয়রের সঙ্গে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করেছেন। এ দিন ইউএনওর বাসায় কোনো হামলা হয়নি।’
লিখিত বক্তব্যে প্যানেল মেয়র লিটু আরও বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছোড়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও মুনিবুর। এতে প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনসহ গুলিবিদ্ধ হন ৬০ নেতাকর্মী।
‘মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ সেখানে উপস্থিত হওয়ার পরও তারা মুহুর্মুহু গুলি ছোড়া হয়। যদিও সেখানে গুলি ছোড়ার মত কোনো পরিস্থিতিই ছিল না। পরে অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি হওয়া নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বরিশালে আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত বলেই এমনটা হচ্ছে। এটা চক্রান্ত।’
ইউএনও মুনিবুর রহমানকে প্রত্যাহারসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণের কথা জানান বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একে এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ইউএনও মুনিবুর একজন স্রেফ মিথ্যাবাদী।’
সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুখ হোসেন, বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ১৩ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ১৩ জনকে আটক করেছি।’
থানার কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি অলিউল্লাহ অলি।
ইউএনওর বাসায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি।
শোক দিবসের ব্যানার অপসারণের জেরে সিটি করপোরেশন ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের (ইউএনও) আনসার বাহিনী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয় বুধবার মধ্যরাতে।