শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে তীব্র স্রোতের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নতুন সময়সূচি মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে।
শিমুলিয়া নদী বন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন সোমবার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পদ্মা সেতুর পিলার সুরক্ষিত রেখে নৌযানগুলো যেন সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করে সেজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত লঞ্চ চলবে। এর আগে রাত আটটা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করত।
পদ্মা সেতুর পাশাপাশি যাত্রী, লঞ্চ ও স্টাফদের নিরাপত্তার জন্যই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শাহাদাত হোসেন আরও জানান, এই নৌপথে ৮৬টি লঞ্চ চলাচল করে। শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যাওয়ার সময় পদ্মা সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের মাঝ দিয়ে এবং বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ফেরার সময় ১৩ ও ১৪ নম্বর পিলারের মাঝ দিয়ে লঞ্চ চলে।
১৩ আগস্ট সকাল ৭টার দিকে পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয় ফেরি কাকলি। বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
এর ঠিক চারদিন আগে ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় ১০ নম্বর পিলারেই ধাক্কা দেয় বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামের রো রো ফেরি। এতে পিলারটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তার আগে ২৩ জুলাই নির্মাণাধীন সেতুটির ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ‘শাহজালাল’ নামের একটি রো রো ফেরির ধাক্কা লাগে। এতে ফেরিটির অন্তত ২০ যাত্রী আহত হন।
পদ্মা সেতুর পিলারের সুরক্ষায় স্রোতের তীব্রতা কমার আগ পর্যন্ত শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে যাত্রী ও মালবাহী ফেরি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানান, পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ফেরির জন্য পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ ডেডিকেটেড করা হয়েছে। সেখানে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। এ ছাড়া চাঁদপুরের হরিণা ও শরীয়তপুরের আলুবাজার ঘাটে পণ্যবাহী ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। সেই পথটি পণ্যবাহী যান পারাপারে ব্যবহার করা হবে।
এর আগে ১৭ নম্বর পিলারে ধাক্কার পর বিআইডব্লিউটিসি তদন্ত কমিটি করে। ২৫ জুলাই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে সেতুর সুরক্ষায় তিনটি সুপারিশ করা হয়। এর একটিতে পিলারগুলো প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।
এ ছাড়া বর্তমান যে শিমুলিয়া ফেরিঘাট আছে, সেই ঘাটটি সরিয়ে পুরোনো মাওয়া ঘাটে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয় সুপারিশে। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, সে ক্ষেত্রে ফেরিগুলোকে সেতু ক্রস করতে হবে না। পুরোনো মাওয়া ঘাট থেকে ফেরি বাংলাবাজার চলে যাবে।
আর যদি সেটা সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে বাংলাবাজার ফেরিঘাটকে সরিয়ে মাঝিরঘাটে নিয়ে আসার সুপারিশ করে কমিটি। সে ক্ষেত্রেও ফেরিগুলোকে সেতু ক্রস করতে হবে না। সেতু যেহেতু ক্রস করতে হবে না, তাই আগামীতে দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা থাকবে না