হবিগঞ্জের অটোরিকশাচালক আব্দুল আহাদ সড়ক দুর্ঘটনার ভয়ে একসময় পেশা পরিবর্তন করেন। স্ত্রীসহ চাকরি নেন প্রাণ আরএফএল গ্রুপে। অবশেষে সেই সড়ক দুর্ঘটনাতেই স্ত্রীসহ প্রাণ হারালেন তিনি।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের নসরতপুর এলাকায় সোমবার সকালে কাভার্ডভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে প্রাণ হারান সাতজন। তাদের মধ্যে আছেন আব্দুল আহাদ-হনুফা বেগম দম্পতিও।
দুপুরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে মরদেহ নিতে আসেন হনুফার বড় ভাই ফারুক মিয়া।
তিনি জানান, নিহত এই দম্পতির দুটি ছেলে সন্তান আছে। তাদের একজনের বয়স ছয় বছর, আরেকজনের আট বছর।
আব্দুল আহাদ অটোরিকশা চালাতেন। সবসময় সড়ক দুর্ঘটনার ভয় পেতেন। তাই অটোরিকশা চালানো বাদ দেন। তিন মাস আগে স্বামী-স্ত্রী দুজনই প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে চাকরি নেন। প্রতিদিন দুজন একসঙ্গে চুনারুঘাট থেকে ওলিপুরে যাতায়াত করতেন।
- আরও পড়ুন: অটোরিকশায় ট্রাকের চাপা, নিহত বেড়ে ৭
সোমবার সকালে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল। কারখানায় যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন না পেয়ে প্রতিবেশীর অটোরিকশা নিয়ে নিজেই চালিয়ে স্ত্রীসহ রওনা দেন। যাত্রী হিসেবে আরও কয়েকজনকে অটোরিকশায় নেন।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুল ইসলাম জানান, অটোরিকশাটি শায়েস্তাগঞ্জের নসরতপুর এলাকায় পৌঁছালে কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
ঘটনাস্থলেই তিন জনের মৃত্যু হয়। আহতদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক আরও তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণ পরেই আরেকজনের মৃত্যু হয়।
ওসি বলেন, ‘অটোরিকশায় চালকসহ ছয়জনের বেশি ওঠা না গেলেও তারা সাতজন ছিলেন। এ ছাড়া প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে দ্রুতগতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে এটি রং সাইডে চলে যায়। তাতেই সংঘর্ষ হয়।’
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) শাহ মোহাম্মদ জহুরুল হোসেন জানান, বিকেলের মধ্যেই সবার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে নিহতদের পরিবারকে দাফনকাফনে সহযোগিতা করা হবে।