বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ভালোলাগা থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানিয়েছি’

  •    
  • ১৫ আগস্ট, ২০২১ ১৬:৪৪

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য কেন বানালেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মূলত ভালোলাগা থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানিয়েছি। তার জন্য আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। ভাবছি মেঘ-বৃষ্টি কমলে প্রধানমন্ত্রীর একটা ভাস্কর্য বানাব।’

কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজ দক্ষতায় শৌখিন তৈজসপত্র, কবিসহ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করে প্রশংসায় ভাসছেন মানিকগঞ্জের চিত্রশিল্পী তপন পাল।

তার হাতের সুনিপুণ চিত্রকর্মে মুগ্ধ পরিবার ও এলাকাবাসী। চিত্রকর্মকে এগিয়ে নিতে এ চিত্রশিল্পী চেয়েছেন সরকারের সহায়তা।

জেলার হরিরামপুরের গোপীনাথপুর পালপাড়া গ্রামের তপন চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট।

তপনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার ঘরে বঙ্গবন্ধু ছাড়াও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্য রয়েছে।

তপনের বাবা হরিপদ পাল বলেন, ‘বংশগতভাবে আমরা পালের কাজ করতেছি। ভাবছিলাম ছোট (তপন) ছেলেকে পড়ালেখা শিখাইয়া চাকরি করামু। কিন্তু অভাবের কারণে তারে বেশি পড়াইতে পারলাম না।

‘আমরা মাটির জিনিস তৈরি করলেও তপন কোনোদিন আমাগো সাথে কাজ করে নাই। আমরা যা তৈরি করছি, তাই তাকায়ে দেখছে। এখন তো দেখি আমাগো চাইতে ভালো কাজ পারে।’

গল্পে গল্পে তপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভাবের জন্য বেশি পড়তে পারি নাই। মাটির প্রতি ভালোবাসা থেকেই বিভিন্ন শোপিস বানাতে শুরু করি। এর মধ্যে হঠাৎ ভাস্কর্য বানাতে ইচ্ছে হয়। কাজী নজরুল ইসলামের ভাস্কর্য দিয়ে শুরু করি।’

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য কেন বানালেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মূলত ভালোলাগা থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানিয়েছি। তার জন্য আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। ভাবছি মেঘ-বৃষ্টি কমলে প্রধানমন্ত্রীর একটা ভাস্কর্য বানাব।’

সিমেন্ট দিয়ে মুখের একটা ভাস্কর্য বানাতে প্রায় এক মাস সময় লাগে। আর মাটি দিয়ে বানাতে লাগে প্রায় ১৫ দিন। একটা সম্পূর্ণ ভাস্কর্য বানাতে সময় লাগে প্রায় তিন মাস। সময় যত বেশি লাগবে, ভাস্কর্য তত ভালো হবে।

আর ইচ্ছেমতো যে কারও মুখের ভাস্কর্য বানাতে এক ঘণ্টা সময় লাগে বলেও জানান তপন।

তপন পালের বড় ভাই শংকর পাল বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে ওর চিন্তাভাবনা আলাদা। আমরা কিছু বানাইতে বললে বানাইত না; শুধু তাকাইয়া দেখতে। হঠাৎ দেখি মানুষের মুখের ভাস্কর্য বানাইতেছে। এখন শুধু এইসব বানায়। ওর হাতের কাজ খুব সুন্দর।’

তপনের বড় বৌদি সুমা রানী পাল বলেন, ‘তপনকে এ কাজ শিখতে দেখি নাই। কাজ না শিখে এত সুন্দর করে শোপিস ও ভাস্কর্য বানাতে পারে বিশ্বাস হয় না।

‘আমরা এতদিন কাজ করেও বানাতে পারলাম না। তপনের কাজ দেখে এলাকার মানুষও খুব খুশি। আর যখন শুনছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানাইছে তখন তো মানুষ আরও বেশি খুশি হইছে।’

স্থানীয় গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব ততটুকু সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া বিষয়টি ইউএনও ও পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হবে। তার কাজকে তিনি যেন এগিয়ে নিতে পারেন সে জন্য সব রকম সাহায্য তাকে করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনে ভালো লেগেছে। একজন সাধারণ পাল এত সুন্দর করে ভাস্কর্য তৈরি করতে পারেন। খোঁজ নিয়ে দেখব, তার যা সহায়তা দরকার তা দেয়ার চেষ্টা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর