নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকোর) কন্ট্রোল রুমে আগুন লাগার কারণে ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নওগাঁবাসীকে।
শুক্রবার রাত ১১টায় শহরের বিদ্যুৎবিহীন অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। তবে আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নেসকো কৃর্তপক্ষ।
নেসকো জানায়, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে নওগাঁ শহরের কাঁঠালতলীতে নেসকোর ৩৩/১১ হাজার কেভি উপকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুমে আগুন লাগে। এতে কন্ট্রোল রুমের ব্রেকার, সুইচবোর্ড, তারসহ সব যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। আগুন লাগার পর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় জেলার ১০টি লাইনে। এতে জেলার প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দেড় ঘণ্টা পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। জরুরি ভিত্তিতে কন্ট্রোল রুম মেরামতের জন্য রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী, বগুড়ার নেসকোর তত্ত্বাবধায়ক এবং নেসকোর নওগাঁ টিম ১৭ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করেন।
দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। বিশেষ করে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীরা পড়েন চরম বিপাকে।
শহরের নওগাঁ মহল্লার গৃহবধূ জাকিয়া জেসমিন জানান, ভোরে ফজরের নামাজের সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। তার কিছুক্ষণ পর বাসার ট্যাঙ্কির পানি ফুরিয়ে যায়। এতে রান্না,গোসলসহ সব কাজে চরম সমস্যায় পড়তে হয়।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দুই দিন ধরে ভর্তি আছেন ছয় বছরের শিশু রিমন হোসেন। তার মা রেবেকা বেগম জানান, ভোর রাত থেকে বিদ্যুৎ ছিল না। হাসপাতালের জেনারেটর ভোর থেকে চালু হলেও দুপুরের দিকে বন্ধ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে চালু করা হয়। তীব্র গরমে ছেলেটির অনেক কষ্ট হচ্ছিল।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক হায়াত মামুদ জানান, ভোর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। যার কারণে হাসপাতালের রোগীদের ভোগান্তি হয়। আর হাসপাতালের নিজস্ব যে জেনারেটর আছে তা দিয়ে দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তাই মাঝে মাঝে জেনারেটর বন্ধ রাখতে হয়েছে।
নেসকো লিমিটেড নওগাঁর (দক্ষিণ) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানজিমুল হক জানান, প্যানেলগুলো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরামত করে আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে পুরােপুরি মেরামত সম্পন্ন হবে।