বরগুনার পাথরঘাটা থেকে একসঙ্গে ১৫টি মাছ ধরার ট্রলার বঙ্গোপসাগরে গিয়েছিল ইলিশ শিকারে। টানা ছয় দিন সাগরে জাল ফেলে বৃহস্পতিবার রাতে ট্রলারগুলো ফিরেছে পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাটে।
এর মধ্যে ১৪টি ট্রলার বিভিন্ন স্থানে জাল ফেললেও মাছের দেখা পায়নি বললেই চলে। তবে পাথরঘাটার উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবিরের মালিকানাধীন এফবি সাইফ-২ নামের ট্রলারটি এক দফায় ৮৭ মণ ইলিশ নিয়ে ফিরেছে।
শুক্রবার দুপুরে এসব ইলিশ দেশের বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র- বিএফডিসি পাথরঘাটা ঘাটে বিক্রি করা হয়। ৫২ হাজার টাকা মণ হিসাবে মাছগুলো ৪৫ লাখ ২৪ হাজার টাকায় কিনে নেন মেসার্স সাইফ ফিশিং কোম্পানি অ্যান্ড কমিশন এজেন্টের গোলাম মোস্তফা আলম।
এফবি সাইফ-২ ট্রলারের মাঝি মো. জামাল হোসেন জানান, রোববার পাথরঘাটা থেকে সব প্রস্তুতি নিয়ে গভীর সাগরে মাছ শিকারে যান তারা। সোমবার জাল পাতলেও কোনো মাছ ওঠেনি। সেখান থেকে পরে আরও ১২ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে সেন্ট মার্টিন পার হয়ে মঙ্গলবার রাতে জাল ফেলেন তারা।
জামাল বলেন, ‘এক খ্যাওতে এত মাছ ওটছে যে বোট ভইরা গ্যাছে। মাছ রাহনের আর জাগা ছিল না। আর খ্যাও দেই নাই। মাছ লইয়া চইলা আসছি।’
ট্রলারের মালিক পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির বলেন, ‘ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না। এর মধ্যে পরপর দুই ট্রিপে আমার ট্রলারে প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করছি।’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গভীর বঙ্গোপসাগর থেকে ট্রলারগুলো ঘাটে আসে। সবাই সামান্য কিছু মাছ পেলেও এফবি সাইফ-২ ফিরেছে প্রচুর ইলিশ নিয়ে।
এক ট্রলারে এত ইলিশ পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মোস্তফা চৌধুরী জানান, এফবি সাইফ-২ ট্রলারে আধুনিক সরঞ্জামের পাশাপাশি লার্জ (লম্বা) জাল ব্যবহার করা হয়। এই জাল লম্বায় ৯০ হাত। আর বর্তমানে গভীর সমুদ্রে অবস্থান করছে ইলিশ। এ কারণে ভাসা জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ইলিশ যে গভীর বঙ্গোপসাগরে বিচরণ করছে, এটা স্পষ্ট। শিগগিরই এসব ইলিশ মোহনার দিকে আসবে এবং ছড়িয়ে পড়বে। এতে করে নদীতেও ইলিশ মিলবে।’