আসামি ধরার কথা বলে ঘরে ঢুকে লুটপাটের অভিযোগ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক গৃহবধূ।
কুমিল্লার জজকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ব্রাহ্মণপাড়ার চান্দলা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সালমা আক্তার বুধবার জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ২ নম্বর আমলি আদালতে এই মামলা করেন।
মামলা আমলে নিয়ে বিচারক বেগম মিথিলা জাহান নিপা জেলা পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন৷ প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ দিয়েছেন ২৯ সেপ্টেম্বর।
আসামিরা হলেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম, কৃষ্ণ সরকার, জীবন কৃষ্ণ মজুমদার, কামাল হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মতিউর রহমান এবং কনস্টেবল মো. নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেন। মামলায় আরও ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী সালমা আক্তার নিউজবাংলাকে জানান, গত মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় তার ভাই লোকমান হোসেনের খোঁজে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে আসেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ঘরে ঢুকেই এসআই সাইফুল ইসলাম, কৃষ্ণ সরকার, নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেন বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি শুরু করেন। কোনো ওয়ারেন্ট আছে কিনা জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার গালাগাল করে লাঠি দিয়ে শোকেসের গ্লাস ভেঙে ফেলেন। তল্লাশির নামে আলমারি খুলে ড্রয়ারে থাকা দুই লাখ টাকা এবং সোনার দুই জোড়া কানের দুল, দুটি চেন ও তিনটি আংটি এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
সালমা আক্তার বলেন, তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল আহাম্মদ খান ও স্বামী আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয় ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের। এক পর্যায়ে তারা তার বাবা ও স্বামীকে মারধর করতে থাকে। এতে গুরুতর আঘাত পেয়ে তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল খান কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, সালমার ভাই লোকমান ডাকাতিসহ ৯ মামলার আসামি। তাকে খুঁজতে পুলিশ সালমার বাড়িতে অভিযানে যায়। তল্লাশি চালানোর সময় সালমার স্বামীসহ বাড়িতে উপস্থিত লোকজন পুলিশের ওপর চড়াও হয়।
ওসি বলেন, সালমার পুুরো পরিবার মাদক কারবারিতে জড়িত। পুলিশ তার স্বামীকে সে সময় ও ভাই লোকমানকে পরে অন্য এলাকা থেকে আটক করে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুখ আহম্মেদ বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে অবশ্যই ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।