একাত্তরের রণাঙ্গনের অকুতোভয় সৈনিক ময়মনসিংহের নান্দাইলের বীরপ্রতীক গাজী আবদুস সালাম ভূঁইয়া মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ছেলে কনক আহাম্মদ জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৫ আগস্ট তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
নান্দাইলের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাজহারুল হক ফকির বলেন, বীরপ্রতীক গাজী আবদুস সালাম ভূঁইয়া উপজেলার নান্দাইল গ্রামের শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীর সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি ১১ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন। সুযোগ পেলেই বিভিন্ন স্কুলে তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাতেন। বহুগুণে গুণান্বিত ছিলেন গাজী আবদুস সালাম ভূঁইয়া।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
১৯৭১ সালে গাজী আবদুস সালাম ভূঁইয়া পাকিস্তান নৌবাহিনীতে চাকরি করতেন। মার্চে সেখান থেকে বাংলাদেশে ব্যাপক হারে সেনা ও অস্ত্র পাঠাতে দেখে তিনি ২৫ মার্চ কৌশলে বিমানে করে ঢাকায় চলে আসেন। আর সেই রাতেই পাকিস্তানি সেনারা হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
প্রথমে ভারতে কিছুদিন প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। পরে যুদ্ধ করেন ১১ নম্বর সেক্টরে। তিনি কামালপুর, বকশীগঞ্জ, শ্রীবরদীসহ আরও কয়েক স্থানে সশস্ত্র যুদ্ধ করেন। ১৫ নভেম্বর কামালপুর যুদ্ধে ১১ নম্বর সেক্টরের আহত অধিনায়ককে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নিরাপদ স্থানে নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।