জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নিচু এলাকা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বুধবার সকাল ৯টা থেকে দিনের দ্বিতীয় জোয়ার শুরু হয়। বেলা ৩টা পর্যন্ত তা ছিল। জোয়ার শুরু হলে খাল হয়ে ধীরে ধীরে পানি চট্টগ্রাম নগরের নিচু এলাকায় ঢুকে পড়ে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তলিয়ে যায় নিম্ন এলাকা।
চকবাজার, কেবি আমান আলী রোড, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, সিডিএ আবাসিক, হালিশহর, চান্দগাঁও, বহদ্দারহাটসহ সরেজমিনে অনেক এলাকায় ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
কেবি আমান আলী রোডের বাসিন্দা রুমন ভট্টাচার্য বলেন, সকাল থেকে জোয়ার শুরু হয়। অলিগলি পেরিয়ে পানি ঘরে ঢুকে গেছে। অনেকে খাটের ওপর অবস্থান নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে পানির জ্বালা সইছি। স্লুইসগেট হবে, বেড়িবাঁধ হবে, নিরসন হবে জলাবদ্ধতা… এমন আশ্বাস সবাই দেয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’
চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া বলেন, ‘লকডাউনের পর দোকান খোলার প্রথম দিনেই এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হলো। দিনভর দোকানের পানি, ময়লা-আবর্জনা সরাতেই ব্যস্ত ছিলাম। জোয়ারের সঙ্গে নর্দমা থেকে উঠে আসা ময়লা-আবর্জনায় সয়লাব হয়ে গেছে গোটা এলাকা।’
দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বেশ কিছু সড়কে পানি উঠলেও আড়তে তা ঢোকেনি।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী সোলায়মান বাদশা বলেন, রাস্তায় পানি উঠে গেছে। পণ্য নিয়ে গাড়ি চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, ভরা কটাল অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করলে চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত বলের প্রবল আকর্ষণে যে তীব্র জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকে তেজ কটাল বা ভরা কটাল বা ভরা জোয়ার বলে। এখন ভরা জোয়ার চলছে। তাই এমনটা ঘটছে।
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মাধ্যমে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বড় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার লক্ষ্য থাকলেও তা এখনও হয়নি। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডেরও পৃথক আরেকটি প্রকল্প চলমান আছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না কোনো প্রকল্পই। তাই দুর্ভোগও পিছু ছাড়ছে না নগরবাসীর।