টানা ১৯ দিনের শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া কঠোর লকডাউন ওঠার আগের দিনই বিক্রি হয়ে গেছে রংপুর থেকে ঢাকাগামী সব বাসের টিকিট।
বুধবার সকাল থেকে শাটডাউন উঠলেও রাতেই রংপুর থেকে বাস ছাড়া হয়। তবে মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেছে বাসের টিকিট।
মঙ্গলবার বিকেলে রংপুর কামারপাড়া কোচস্ট্যান্ডে ঢাকামুখী যাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে ঢাকা যাওয়ার আর কোনো টিকিট নেই। তারা টিকিটের জন্য এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে ঘুরছেন। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা দিতে চাইলেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।
বাসস্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রংপুর কামারপাড়া কোচস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন ঢাকামুখী শতাধিক দূরপাল্লার ডে-নাইট কোচ চলে। লকডাউনের আগে ঢাকায় আসা কিছু বাস আটকা পড়ায় কিছুটা সংকট রয়েছে। বাকি গাড়িগুলোর সব টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে।
হানিফ পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা শাহিন হোসেন মঙ্গলবার বলেন, ‘আজ রাত ৯টা থেকে আমাদের গাড়ি চলবে। আজকের রাতের কোনো টিকিট নাই। অনেকে টিকিট চাচ্ছেন, কিন্তু না থাকলে দিব কোত্থেকে। যাত্রীর চাপ বেশি, কিন্তু টিকিট একদম নাই।’
আগমনী গাড়ির টিকিট বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়ি ঢাকা গেছে, আসতে পারে নাই। ওই জন্য গাড়ি কম। লকডাউন খোলার পর অনেকে ঢাকায় যাচ্ছে...। যারা আগে টিকিট নিছে, তারা পাইছে। যারা এখন আসতেছে তারা তো টিকিট পাবে না।’
ডিপজল পরিবহনের কাউন্টার থেকে পরাগ মিয়া বলেন, ‘যাত্রীর চাপ বেশি। চাহিদা অনুযায়ী টিকিট কম। অনেকে আবার গাড়ির পেছনের সিটে যাইতে চায় না। আমরা বলতেছি, কাল যাও টিকিট হবে। কিন্তু আজকের টিকিট চায়, কিন্তু সেটা হয় ক্যামনে।’
রাজিয়া সুলতানা বিউটি নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আমার খুব জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় যাওয়া দরকার, কিন্তু টিকিট পাচ্ছিলাম না। একজনকে ধরে ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে এসি গাড়ির একটা টিকিট পাইছি।’
কোন গাড়ির টিকিট পেয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘ভাই বেশি টাকা দিয়ে টিকিট নিছি, গাড়ির নাম বলা যাবে না। আজ রাতে যাব, দোয়া করেন।’
ফজলুল হক নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘বাসোর টিকিট না পেয়ে আমি মাইক্রোবাসে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। ভাড়া একটু বেশি, কিন্তু যেতে তো হবে…।’
লকডাউন শেষে পরিবহন চলাচল নিয়ে মঙ্গলবার সকালে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন।
সভায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভূঞার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলিম মাহামুদ, রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটির ১ নম্বর সদস্য এ কে এম মোজাম্মল হক, নির্বাহী সদস্য ফারহান জিহানসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মোজাম্মেল হক জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন রংপুর বিভাগে অর্ধেক গণপরিবহন সড়কে চলাচল করবে। এতে আগের ভাড়ায় বাসের ৪০ সিটেই যাত্রী বসতে পারবেন। এ জন্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।